প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনির প্রত্যন্ত হাইল্যান্ড অঞ্চলে উপজাতি গোষ্ঠীর দুই গোত্রের সংঘর্ষে ও গোলাগুলিতে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছেন।
সোমবার দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, এই সপ্তাহান্তেই এনগা প্রদেশে উপজাতীয় বিরোধের সময় তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিলো।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে হাইল্যান্ডস এলাকায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সহিংসতা চলছিলো। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডগুলো এত বছরের সংঘর্ষের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
অবৈধ অস্ত্র এই সংঘর্ষকে আরও মারাত্মক করে তুলেছে এবং সহিংসতার ইন্ধন যুগিয়েছে।
রাজধানী পোর্ট মোরেসবির থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ওয়াবাগ শহরের কাছ থেকে পুলিশ এই ঘটনায় নিহতদের মৃতদেহ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।
রয়্যাল পাপুয়া নিউগিনি কনস্ট্যাবুলারি ভারপ্রাপ্ত সুপার জর্জ কাকাস অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে (এবিসি) বলেছেন, আমার দেখা এনাগ প্রদেশে এটি সবচেয়ে বড় গণহত্যা। সম্ভবত পুরো পার্বত্য পাপুয়া নিউগিনিতেই এই হত্যাকাণ্ড একটি বড় ঘটনা। আমরা সবাই বিধ্বস্ত এবং সবাই এক প্রকার মানসিকভাবে চাপে আছি।
পুলিশ ঘটনাস্থলের ভিডিও ও ছবি পায় যেখানে লাশবোঝাই একটি ট্রাকে দেখানো হয়েছে। দেশটিতে প্রায়শই জমি ও সম্পদের বণ্টন নিয়ে উপজাতিদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকে।
দেশটির সরকার গত জুলাইয়ে এঙ্গাতে তিন মাসের লকডাউন দিয়েছিলো। সেই সময় পুলিশ কারফিউ ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিলো।
এই সহিংসতা গত বছরের আগস্টে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পৌঁছায় যখন তিনজন মৃত ব্যক্তির সাথে জড়িত গ্রাফিক ভিডিও অনলাইনে প্রচারিত হয়েছিল।
গভর্নর পিটার ইপাটাস এবিসিকে বলেছেন, এই হামলার আভাস আমরা পেয়েছিলাম। ১৭ টা উপজাতি জড়িত ছিলো সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার সাথে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দাজ করেছিলাম যে এই লড়াইটি হতে চলেছে এবং আমরা গত সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম যাতে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে।
সরকার গত মাসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে একটা বড় ধরনের দাঙ্গা ও লুটপাটে পর যেখানে ১৫ জন নিহত হয়েছিলো।
দেশটির ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ অস্ট্রেলিয়া বলেছে যে হত্যাকাণ্ডের খবরটি খুব হতাশাজনক।
সোমবার এক রেডিও সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেন, পাপুয়া নিউ গিনির নিরাপত্তার জন্য আমরা যথেষ্ট সহায়তা দিচ্ছি। বিশেষ করে পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি আমরা।