জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা পদত্যাগ করেছেন। একই সাথে নিজের রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রধানের পদ থেকেও অব্যাহতি নিয়েছেন তিনি।
আজ (১৪ আগস্ট) রাজধানী টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা নিজেই এ তথ্যও নিশ্চিত করেন। তিনি আরও বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে এলডিপি নতুন একজন শীর্ষ নেতা বেছে নেবে, যিনি আসন্ন নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দেবেন।
জাপানের জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ভাবশিষ্য ফুমিও কিশিদা দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাদের মধ্যে একজন। এই বিপুল জনপ্রিয়তার ওপর ভর দিয়েই ২০২১ সালের নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন তিনি।
তবে তার রাজনৈতিক দল, এলডিপির নেতা-কর্মীদের দুর্নীতি, জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি এবং নিজেদের মুদ্রা ইয়েনের মান পড়তে থাকার কারণে সম্প্রতি তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছিল। গত মাসে এক জরিপে দেখা গেছে, জাপানের মাত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ কিশিদাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।
আজ (১৪ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে কিশিদা বলেন, “আমাদের দলে বড় পরিবর্তন আসছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা আমি মেনে নিয়েছি। সামনের নির্বাচনে সেই আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটবে।”
সাংবিধানিকভাবে এখনও কিশিদার মেয়াদ রয়েছে এক বছর। এলডিপির পক্ষ থেকে কিশিদাকে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তার সিদ্ধান্তে অনড়। এ ব্যাপারে তার দলের এক নেতা বলেছেন, "বর্তমান অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের পদে তার থাকা ‘দায়িত্বহীনতার’ পরিচয়।"
আরেক সদস্য বিবিসিকে বলেছেন, “তার এই সিদ্ধান্ত একই সঙ্গে দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। পররাষ্ট্রনীতি, প্রতিরক্ষানীতি এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তার রেকর্ড যথেষ্ট ভালো। কিন্তু দলের দুর্নীতি কেলেঙ্কারির কারণে তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো।”
প্রসঙ্গত, জনপ্রিয়তার দিক থেকে জাপানের রাজনীতিতে এলডিপির প্রভাব এখনও একচেটিয়া। ১৯৫৫ সাল থেকে জাপানে ক্ষমতায় রয়েছে দলটি। বর্তমানে জনপ্রিয়তার যে সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দলটি, তা প্রায় অভূতপূর্ব।