ছবিঃ সংগৃহীত।
ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাকে (ইউএসএআইডি) পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা করেছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের গতকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইউএসএআইডির সদর দপ্তরে না যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে
মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান ত্রাণ সংস্থা ইউএসএআইডি। সারা বিশ্বে লাখ কোটি ডলারের ত্রাণসহায়তা বিতরণ করে থাকে সংস্থাটি ।
এ ব্যাপারে
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি এখন ইউএসএআইডির ভারপ্রাপ্ত প্রধান।
ইউএসএআইডি
বন্ধের বিরোধিতা করে ডেমোক্রেটিক আইনপ্রণেতারা
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনাকে ‘অবৈধ,
অসাংবিধানিক' উদ্যোগ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এই উদ্যোগ বিদেশে
দরিদ্র মানুষের জীবনে ভয়াবহ বিরূপ ফেলবে, জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং বৈশ্বিক মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাবে।
মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর শীর্ষ উপদেষ্টাদের একজন ধনকুবের ইলন মাস্ক ইউএসএআইডির কড়া সমালোচনা করে সন্সথাটিকে 'ক্রিমিনাল অরগ্যানাইজেশন'
হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
গতকাল (৩
ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘উগ্র বাম উন্মাদরা' সংস্থাটি
পরিচালনা করছে। ‘ভয়ংকর সব জালিয়াতি' করেও
তাঁরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
যদিও
ট্রাম্প কারও নাম উল্লেখ করেননি বা বিস্তারিত আর
কিছু বলেননি।
সাবেক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির
হাত ধরে ১৯৬১ সালে ইউএসএআইডির যাত্রা শুরু হয়েছিল। 'কোল্ডওয়ার' -এর সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে নিজেদের সমর্থন বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে অর্থসহায়তা দিতে সংস্থাটি গড়ে তোলা হয়। এর কর্মী সংখ্যা
প্রায় ১০ হাজার, বাজেট
প্রায় ৪ হাজার কোটি
মার্কিন ডলার। এই সংস্থার মাধ্যমে
বৈদেশিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার বছরে ৬ হাজার ৮০০
কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করে।
মার্কিন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইউএসএআইডিকে সম্পূর্ণরূপে একটি অকার্যকর সংস্থা দাবি করে এল সালভাদরে সাংবাদিকদের
বলেন, ‘সংস্থাটির অনেক কার্যক্রম চলমান থাকবে। তারা আমেরিকার বৈদেশিক নীতির অংশ হতে চলেছে, যদিও এটিকে অবশ্যই আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।’
ট্রাম্প
প্রশাসন কীভাবে এই ধরনের পরিবর্তন
বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে, তা এখনো স্পষ্ট
নয়।
ইউএসএআইডি
নিয়ে ট্রাম্প এবং রুবিওর এই মন্তব্যের আগে
মাস্ক বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএআইডি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
কর্মদিবস
শেষে সপ্তাহান্তে সংস্থাটির
দুই শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এবং ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল
নির্দেশনায় ইউএসএআইডির
কর্মীদের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। শত শত কর্মীর ই-মেইল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিবিসি তথ্য পেয়েছে।
ইউএসএআইডির
কার্যালয়ের বাইরে ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতারা বলেন, এই পদক্ষেপ আইনবিরোধী
এবং এই সংস্থাটি বন্ধ
করে দেওয়া হলে জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
মেরিল্যান্ডের
সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন বলেছেন, ‘এটা শুধু আমাদের প্রতিপক্ষের জন্য একটি উপহার নয়...সহজ ভাষায় এটা অবৈধ।’
মেরিল্যান্ডের
কংগ্রেস সদস্য জনি ওলসজেউস্কি বলেন, মার্কিন সহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার পর সিরিয়ায় হাজারো
ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাকে কারাবন্দী করে রাখার দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীদের চাকরি প্রায় ছেড়ে দেওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
জনি
আরও বলেন, ‘এটাই জীবনের বাস্তবতা, এটা বিপজ্জনক এবং এটা গুরুতর।’
অন্যদের
অভিযোগ, নিজের ব্যবসার স্বার্থে মাস্ক এসব করছেন।
কানেকটিকাটের
সিনেটর ক্রিস মরফি দাবি করেছেন, ‘ইলন মাস্ক চীনের সঙ্গে তাঁর ব্যবসা থেকে লাখো কোটি ডলার আয় করেন এবং
আজকের এই পদক্ষেপে চীন
উল্লাস করছে।’
ট্রাম্পের
সরকারের দক্ষতা বিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছেন মাস্ক। এবার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প নির্বাহী
আদেশে এই বিভাগটি চালু
করেন। এটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো অধিদপ্তর নয়। কিন্তু ট্রাম্পের সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্দেশ পূরণে সহায়তা করতে এই বিভাগকে বিস্তৃত
স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
আইনিভাবে এই বিভাগের কতটা ক্ষমতা রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। বিভাগটির সরকারি কোনো প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে এটি আদালতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh