ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ বা ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সতর্কতায় তিনি হামাস নেতাদের গাজায় আটক থাকা সকল ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে এবং গাজা ছেড়ে চলে যেতে বলেছেন।
আজ (৬ মার্চ) আল জাজিরা ও বিবিসি সূত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং হামাস নেতাদের গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
এটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন হোয়াইট হাউস ১৯৯৭ সালের পর প্রথমবারের মতো মার্কিন-ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজা যুদ্ধের অবসান নিয়ে হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ইসরায়েল গাজা ভূখণ্ডে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে, যার ফলে ফিলিস্তিনিরা ক্রমশ ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ছে। ইসরায়েলের অবরোধ খাদ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে এবং খাদ্য সংকট তৈরি করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, তাদের স্টকে থাকা খাবার দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতির মধ্যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য হামাস ও গাজার জনগণের উদ্দেশ্যে হুমকি দেন। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে তিনি সতর্ক করে বলেন, বন্দিদের মুক্তি না দিলে "চড়া মূল্য দিতে হবে"।
পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, "এটি আপনাদের জন্য শেষ সতর্কতা! (হামাসের) নেতৃত্বের জন্য এখন সময় এসেছে গাজা ত্যাগ করার। আপনাদের জন্য এখনও এই সুযোগটি রয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "এছাড়া, গাজার জনগণের কাছে (আমার বার্তা): আপনাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে, কিন্তু যদি আপনারা জিম্মিদের আটকে রাখেন, তাহলে সেটা সম্ভব হবে না। যদি আপনি এমন কিছু করেন, তাহলে আপনি মৃত! স্মার্ট সিদ্ধান্ত নিন।"
এদিকে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত অ্যাডাম বোহেলার নেতৃত্বে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের সঙ্গে বৈঠক চলছে। এ বৈঠকটি হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আলোচনার অংশ, যা একেবারে নতুন এবং অভূতপূর্ব ঘটনা, কারণ যুক্তরাষ্ট্র কখনোই সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেনি। ১৯৯৭ সালে মার্কিন সরকার হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
এই আলোচনা মূলত মার্কিন বন্দিদের মুক্তি এবং গাজায় দীর্ঘ যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হচ্ছে। তবে, সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার ফলাফল এখনও চূড়ান্ত হয়নি এবং হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি।