আন্তর্জাতিক
মহাকাশ স্টেশনে ২৮৬ দিন কাটানোর পর পৃথিবীতে ফিরে
এসেছেন সুনীতা উইলিয়ামস, বাচ উইলমোরসহ ৪ নভোচারী। মঙ্গলবার
(১৮ মার্চ) স্থানীয়
সময় বিকেল ৫ টা ৫৭
মিনিটে তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে অবতরণ করে।
এছাড়াও,
সুনীতা ও বাচের সঙ্গে
ফিরেছেন নাসার নভোচারী নিক হগ এবং রুশ
নভোচারী আলেকজান্ডার গর্বুনভ। তারা সবাই স্পেসএক্সের ‘ক্রু ড্রাগন’ ক্যাপসুলে পৃথিবীতে ফিরেছেন, যেটি ইলন মাস্কের কোম্পানি পরিচালিত।
ক্রু
ড্রাগন ক্যাপসুলটি চারটি বিশেষ প্যারাসুটের সাহায্যে ফ্লোরিডার উপকূলে অবতরণ করে। ইলন মাস্ক তার এক্স অ্যাকাউন্টে ক্যাপসুলটির অবতরণের দৃশ্য শেয়ার করেছেন।
গত
বছর জুনে, সুনীতা ও বাচ বিমান
প্রস্তুতকারী মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি নভোযান স্টারলাইনারে চড়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর তারা আটকে
পড়েন, কারণ স্টারলাইনারে ত্রুটি দেখা দেয়।
এ
অবস্থায় তাদের ফেরত আনতে নাসা গত বছর থেকেই
পরিকল্পনা শুরু করে। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর, তিনি দুই নভোচারীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তৎপরতা বাড়ান। এরপর নাসা ক্রু-১০ মিশনের মাধ্যমে
তাদের ফেরানোর উদ্যোগ নেয়।
ফ্লোরিডার
উপকূলে অবতরণের পর কিছুক্ষণ সমুদ্রে
ভাসছিল ক্রু ড্রাগন ক্যাপসুলটি। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, ক্যাপসুলটির আশেপাশে কৌতূহলী ডলফিনেরা সাঁতার কাটছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর,
মার্কিন নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ নভোচারীদের ক্যাপসুল থেকে বের করে নিয়ে আসে, যাতে তারা পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন।
এরপর,
উদ্ধারকারী জাহাজ নভোচারীদের নিয়ে হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারের উদ্দেশে রওনা দেয়। সেখানে তাদের বরণ করার জন্য উৎসবের পরিবেশ প্রস্তুত ছিল।
তবে,
পৃথিবীতে ফিরে এলেও মহাকাশচারীরা এখনই তাদের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে
দেখা করতে পারবেন না। তাদের কয়েক সপ্তাহ ক্রু কোয়ার্টারে থাকতে হবে, যেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় শূন্য মাধ্যাকর্ষণে থাকার ফলে শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে।
মহাকাশচারীদের
অবতরণের পর নাসার উপ
সহযোগী প্রশাসক জোয়েল মনটালবানো এবং কার্যক্রম সমন্বয় ব্যবস্থাপক বিল স্পিচ এক সংবাদ সম্মেলনে
বলেন, “এই মহাকাশচারীরা আমাদের
গর্ব। তারা ৯ মাসে ৯০০
ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ১৫০টি গবেষণা করেছেন। তাদের ফিরে আসায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।”