ছবিঃ সংগৃহীত।
হাঙ্গেরির সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এটি গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা উপেক্ষা করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হাঙ্গেরিতে রাষ্ট্রীয় সফর করার পর পরই ঘোষণা করা হয়। আজ (৩ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত নভেম্বরে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি। এই পরোয়ানা জারির একদিন পর, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান নেতানিয়াহুকে বুদাপেস্ট সফরের আমন্ত্রণ জানান।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০,০০০ প্রাণহানি এবং হাজার হাজার আহতের ঘটনা ঘটিয়েছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ করেছে, তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে যে, এসব অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইহুদি বিদ্বেষ থেকে করা হয়েছে। ইসরায়েল আরো বলেছে, আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের কারণে একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে আইসিসি বৈধতা হারিয়েছে।
আইসিসির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে হাঙ্গেরি তাত্ত্বিকভাবে আদালতের আদেশ অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য ছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, আইসিসির রায় "দুঃসাহসী, ছদ্মবেশী এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য", এবং তারা এ রায়ের প্রতি কোনো সম্মান দেখাবে না।
হাঙ্গেরি ১৯৯৯ সালে আইসিসির প্রতিষ্ঠাকালীন নথিতে স্বাক্ষর এবং ২০০১ সালে অনুমোদন করলেও এটি হাঙ্গেরিয়ান আইনের অংশ হয়নি। এর ফলে, হাঙ্গেরি আইসিসির কোনো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করতে বাধ্য ছিল না।
হাঙ্গেরির চিফ অব স্টাফ জার্জলি গুলিয়াস গত নভেম্বরে বলেছিলেন, হাঙ্গেরি আইসিসির রোম সংবিধির অনুমোদন দিলেও সেটিকে হাঙ্গেরিয়ান আইনের অংশ করেনি, এবং এ কারণে হাঙ্গেরিতে আইসিসির কোনও পদক্ষেপ কার্যকর করা যাবে না। গুলিয়াস বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এমটিআইকে বলেন, সরকার আজ থেকে আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে।
এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদালতের প্রসিকিউটর করিম খানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর আইসিসি থেকে হাঙ্গেরি বের হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন ভিক্টর অরবান। তিনি এক পোস্টে বলেন, "মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় হাঙ্গেরির কী ভূমিকা থাকা উচিত, তা পুনর্বিবেচনা করা সময়ের দাবি।"
আইসিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ। এর জন্য হাঙ্গেরির সংসদে একটি বিল পাশ করতে হবে। তবে ভিক্টর অরবানের ফাইডেসজ পার্টির সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার কারণে আইনটি পাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইসিসির সদরদপ্তর নেদারল্যান্ডসে অবস্থিত, এবং দেশটি জানিয়েছে যে, হাঙ্গেরি যখন পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া শেষ না করবে, তখন পর্যন্ত তাকে আদালতের সমস্ত বাধ্যবাধকতা পালন করতে হবে। ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাস্পার ভেলডক্যাম্প বলেছেন, আইসিসি থেকে বের হওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় এক বছর সময় লাগবে, এবং এই সময়ে হাঙ্গেরিকে আদালতের সব বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh