মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ইতোমধ্যে বিশ্বের আর্থিক বাজারে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। তার এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর প্রভাব মার্কিন শুল্ক আয়ের গ্রাফে প্রতিফলিত হবে, যা এক শতাব্দী ধরে দেখা যায়নি— এমনকি বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের উচ্চমাত্রার রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতির সময়ও নয়। এ পদক্ষেপটি রাতারাতি শেয়ারবাজারে পতন ঘটিয়েছে, বিশেষ করে এশিয়ার বাজারে।
বুধবার (২ এপ্রিল) ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর, বিবিসির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল ইসলাম মন্তব্য করেন, শুল্ক থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, প্রায় ১০০ বছর আগে ত্রিশের দশকে মার্কিন অর্থনীতির সুরক্ষিত আমলে সর্বশেষ এ ধরনের উচ্চ রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
নতুন শুল্ক ঘোষণার পর এক রাতেই বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে, বিশেষত এশিয়ার বাজারে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সব আমদানি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ সার্বজনীন শুল্ক আরোপ করেছেন, যা ৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এ ছাড়া, বাণিজ্য ঘাটতির কারণে কিছু দেশের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আরোপ করা হয়েছে।
এশিয়ার দেশগুলোর ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার কোম্পানি ও কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়িক মডেলও ভেঙে যাবে। বিশ্বের বৃহত্তম কোম্পানিগুলোর সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে যেতে পারে, যা তাদেরকে চীনের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্পষ্টভাবে বলেছেন, এটি একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা, কোনো আলোচনা নয়। ট্রাম্পের এই নীতির মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিকে শূন্যে নিয়ে আসা, যার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি পরিবর্তিত হবে।
পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ওপর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে পোশাক, খেলনা ও ইলেকট্রনিক্সের দাম দ্রুত বেড়ে যাবে। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং মার্কিন শিল্পকে সুরক্ষিত রাখতে এই শুল্ক আরোপ করেছেন। এ শুল্কের আওতায় চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইরাক, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।