ফিলিস্তিনের
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১৮ মাস ধরে
চলা এই আগ্রাসনে ৫০
হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করেছে, যার কারণে সেখানে তীব্র খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বিশ্বজুড়ে এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে
ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তবে ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় এক দানা গমও
প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সোমবার
(৭ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা আনাদোলু একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদন
অনুযায়ী, ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ সোমবার একটি বিবৃতিতে বলেছেন, গাজায় “গমের একটি দানাও”প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ-এ বলেন, "গমের
একটি দানাও গাজায় প্রবেশ করবে না।"
স্থানীয়
সরকার এবং মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, ২ মার্চ থেকে
ইসরায়েল গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে মানবিক
সহায়তা, ত্রাণ এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে, যা এক মারাত্মক
মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। মূলত, গাজায় নতুন আক্রমণের অংশ হিসেবেই এই অবরোধ আরোপ
করা হয়। গত ১৮ মার্চ
থেকে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই হামলা চলতি
বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ভেঙে দিয়েছে।
ইসরায়েলি
অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচ আরও বলেছেন, তিনি গাজা থেকে ইসরায়েলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনার চেয়ে হামাসকে পরাজিত করাকেই অগ্রাধিকার দেন। গত সপ্তাহে ইসরায়েলের
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজায় আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন এবং ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
২০২৩
সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে ৫০ হাজার ৭০০
জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর
আগে, গত বছরের নভেম্বরে
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। গাজায় এই আগ্রাসনের জন্য
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগে মামলা মোকাবিলা করছে।