ভারতে
বিতর্কিত মুসলিম ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন কার্যকরের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরেও। রাজ্যটির ইম্ফল উপত্যকায় ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে হাজার হাজার নারী, পুরুষ এবং শিশু অংশ নিয়েছে।
মঙ্গলবার
(৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে,
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মণিপুরে বিক্ষোভের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ইম্ফল পূর্বে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়। খুমিদক বাজার এবং হাইক্রুমাখং এলাকাগুলোতে মুসলিম অধ্যুষিত তিনটি প্রধান এলাকা - কাইরাং, খাবেইসোই, এবং খুরাই খুমিদক - থেকে মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেন। বিক্ষোভকারীরা এদিন মানববন্ধন করেন, স্লোগান দেন এবং বিতর্কিত বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন।
এর
আগে, বিতর্কিত মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাসের প্রতিবাদে মণিপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক নেতার বাড়িতে
আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। ওই নেতার নাম
আসকার আলী, যিনি বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার মণিপুর শাখার সভাপতি।
মঙ্গলবারের
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া তৈয়বুর রহমান নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন,
"বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি আসকার আলীর ওপর ব্যক্তিগত আক্রমণ নিন্দনীয়। তবে, বিলটি পাস হওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ এবং এই বিল বাতিল
না হওয়া পর্যন্ত গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ চলবে।"
এনডিটিভি
জানায়, বিতর্কিত মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব, থৌবাল এবং বিষ্ণুপুরসহ অন্যান্য মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে থৌবাল
জেলার লিলং-এ বিজেপি সংখ্যালঘু
সেলের প্রধান মোহাম্মদ আসকার আলীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা, এরপর লিলং এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়।
জনরোষের
মুখে আসকার আলী পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন।
ভারতীয়
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিতর্কিত বিলটি সংসদে পাস হওয়ার আগেই সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। প্রায় ১৫টি আবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং শীর্ষ আদালতে সেগুলোর শুনানি আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে,
সংসদে পাস হওয়ার পর ভারতের প্রেসিডেন্টের
স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই সপ্তাহান্তে বিতর্কিত
ওয়াক্ফ সংশোধনী বিলটি কার্যকর হয়। এর আগে, গত
বুধবার ও বৃহস্পতিবার ম্যারাথন
বিতর্কের পর লোকসভা ও
রাজ্যসভায় এটি পাস হয়।