ফিলিস্তিনের
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বর্তমানে সেখানে ৬০ হাজারের বেশি
শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। একই সঙ্গে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের ঘাটতি সম্পর্কেও সতর্কতা উচ্চারণ করেছে সংস্থাটি।
আজ
(১১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা
সমন্বয়-বিষয়ক কার্যালয় (OCHA)-এর বরাতে এই
তথ্য জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি ।
জাতিসংঘের
মুখপাত্র ফারহান হক বৃহস্পতিবার এক
সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজায় সহায়তা প্রবেশে অনুমতি দিতে সীমান্ত ক্রসিংগুলো পুনরায় খুলে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান, যেসব কমিউনিটি কিচেন খাবার ও জ্বালানি সরবরাহ
করছিল, সেগুলোর রসদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এছাড়া, বাস্তুচ্যুত মানুষের পানির চাহিদা পূরণ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।
ফারহান
হক আরও বলেন, পর্যাপ্ত পানি, সাফাই সামগ্রী ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন
পরিবেশের অভাবে জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। শুধু গত মার্চ মাসেই
গাজার এক-তৃতীয়াংশ পরিবারে
উকুনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
সংবাদ
সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান, যদি নিরস্ত্র জরুরি কর্মীদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়, তবে তা যুদ্ধাপরাধের আওতায়
পড়ে কিনা। জবাবে জাতিসংঘ মুখপাত্র বলেন, এই ধরনের হামলা
আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং এর দায়ীদের জবাবদিহি
নিশ্চিত করা উচিত। বিষয়টি যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞায় পড়ে, তবে তদন্ত চলমান থাকায় তিনি সরাসরি মন্তব্য করতে চান না।"
এদিকে,
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে দেখা যায়, গত ২৩ মার্চ
গাজার দক্ষিণে ইসরায়েলি বাহিনী ১৫ জন জরুরি
কর্মীকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে। ভিডিওটি উদ্ধার করা হয় নিহত এক
প্যারামেডিকের মোবাইল থেকে, যাকে পরে গণকবরে পাওয়া যায়।
ইসরায়েল
দাবি করেছিল, ওই যানগুলো 'সন্দেহজনকভাবে'
এগিয়ে আসছিল, কিন্তু ভিডিও ফুটেজে এর কোনো প্রমাণ
মেলেনি। বরং তা থেকে স্পষ্ট
হয়, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত ও নির্বিচার ছিল।
প্যালেস্টাইন
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, নিহতদের মধ্যে ৮ জন রেড
ক্রিসেন্ট কর্মী, ৫ জন সিভিল
ডিফেন্স সদস্য, ১ জন জাতিসংঘকর্মী
ও একজন সাধারণ স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন।
জাতিসংঘ
ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলছে, গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি
ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী ও শিশু।