চীনা
পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক শুল্ক আরোপের পাল্টা জবাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে চীন। আজ (১১ এপ্রিল) চীনের
অর্থমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন।
আগামীকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) থেকে
নতুন এই শুল্কহার কার্যকর
হবে।
চীনের
রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, শুক্রবার বেইজিং সব মার্কিন পণ্যের
ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে
বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে। দেশটির মন্ত্রিপরিষদের অধীন কাস্টমস ট্যারিফ কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,
মার্কিন পণ্যের আর চীনা বাজারে
কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।
চীনের
এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ, যা চলতি বছরের
জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কয়েক
দফায় কার্যকর হয়। এর আগে ট্রাম্পের
প্রথম মেয়াদে এবং বাইডেন প্রশাসনের সময়েও চীনা পণ্যের ওপর নানা মাত্রায় শুল্ক আরোপ করা হয়।
তবে
চীন শুরুতে জানায়, তারা ওয়াশিংটনের আগ্রাসী শুল্কনীতির পাল্টা দিতে আগ্রহী নয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক ‘একতরফা ও দমনমূলক’ পদক্ষেপের
জবাবে চীন এবার কঠোর অবস্থান নেয়।
চীনের
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা আমাদের স্বার্থ ও বৈধ অধিকার
রক্ষায় সব সময় লড়াই
করব। যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা দমনমূলক
আচরণ শুধু বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য হুমকি নয়, বরং এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়মকানুনের সরাসরি লঙ্ঘন।
এদিকে
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে
চলতি বছরের শুরুতে ৫৮২.৪ বিলিয়ন ডলারের
বাণিজ্য হয়েছে। তবে চলমান শুল্কযুদ্ধের কারণে এই পণ্যবাণিজ্য ৮০
শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
চীনের
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই ডব্লিউটিও-তে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ
দাখিল করেছে এবং এ বিষয়ে মামলা
দায়েরের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা
বলছেন, এই নতুন শুল্ক
আরোপ বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে
চলমান বাণিজ্য উত্তেজনাকে আরও ঘনীভূত করবে, যার প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।