ইয়েমেনের রাস ঈসা তেল বন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের চালানো ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১৭১ জন। হুথি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আলাসাবাহি শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতের হামলাটি ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রাণঘাতী হামলা বলে জানিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানায়, এই হামলার লক্ষ্য ছিল হুথিদের জ্বালানি সংগ্রহ এবং তা বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আয় রোধ করা।
আলজাজিরার সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-আত্তাব, যিনি রাজধানী সানা থেকে প্রতিবেদন করেছেন, জানান—তেল বন্দরটিতে যখন কর্মীরা কাজ করছিলেন, তখন প্রথম চারটি বোমা হামলা হয়। সেখানে সাধারণ ট্রাক চালকরাও উপস্থিত ছিলেন, যাদের অনেকেই হতাহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, রাস ঈসা তেল বন্দরটি ইয়েমেনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিহতদের বেশিরভাগই সাধারণ বেসামরিক মানুষ ছিলেন। এত বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনায় ইয়েমেনজুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে।
উল্লেখ্য, ইয়েমেনের রপ্তানি হওয়া পণ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ এবং দেশের ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা আসে রাস ঈসা, হোদেইদা ও আস-সালিফ বন্দরের মাধ্যমে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরই ইয়েমেনে আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেন। মার্চের শুরুতেই মাত্র দুইদিনের হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত হন। বৃহস্পতিবারের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৭০ জনের বেশি।
হুথি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আল-মাসাইরাহ টিভিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এসব হামলা আমাদের মনোবল ভাঙতে পারবে না। আমরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখব।
হামলার পর দখলদার ইসরায়েল দাবি করে, ইয়েমেন থেকে তাদের লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে, যা পরবর্তীতে তারা ভূপাতিত করে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানাতে হুথিরা ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ১০০টিরও বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দিয়েছে, এসব হামলা বন্ধ না হলে তাদের পাল্টা হামলাও চলবে।