পাকিস্তান জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
১৫ বছর পর আয়োজিত এই বৈঠকটি ছিল বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। বৈঠকটি সম্পন্ন হয় সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশে।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে মতবিনিময় হয়। আলোচনায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় দুই দেশের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং জনগণের পারস্পরিক আকাঙ্ক্ষার ওপর।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় উচ্চপর্যায়ের যেসব বৈঠক হয়েছে, সেগুলোর প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে পাকিস্তান জানিয়েছে, এসব যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনে সহায়ক হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উভয় দেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো দ্রুত চূড়ান্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। পাশাপাশি নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি নিয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বৈঠকে পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশ পক্ষ থেকে মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি প্রদানের প্রস্তাবে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং শিক্ষা খাতে আরও গভীর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
এছাড়া, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌ যোগাযোগ শুরুর উদ্যোগকে দুই পক্ষ স্বাগত জানায়। সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ পুনরায় চালুর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণের ক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে উভয় দেশ।
বৈঠকে ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা হয়। দুই দেশই দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দেয়।
পাশাপাশি, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন এবং সেখানে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দুই দেশ একযোগে নিন্দা জানায়।
বৈঠকের শেষে জানানো হয়, ২০২৬ সালে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এই পর্যায়ের পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।