সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ সম্প্রতি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠিয়েছেন। সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) তেহরানে আয়াতুল্লাহ খামেনির সঙ্গে বৈঠককালে ওই চিঠি সরাসরি তার হাতে তুলে দেন।
চিঠির বিষয়বস্তু গণমাধ্যমে প্রকাশ করা না হলেও বৈঠকটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির ইঙ্গিত বহন করে। দীর্ঘদিন পর এমন উচ্চ পর্যায়ের সৌদি সফর এবং খামেনির সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎকে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান কৌশলগত পরিবর্তনের অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
বৈঠকে আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই কল্যাণকর হবে। এই অঞ্চলভুক্ত দেশগুলো একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাইরের শক্তির ওপর নির্ভর না করে, এই অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোর মধ্যকার সহযোগিতাই আমাদের আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
এদিকে, সৌদির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যকার এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা ও অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এই বৈঠকের মাধ্যমে ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সৌদি আরবের কোনো উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করলেন। উল্লেখ্য, সেই সময় তেহরান সফর করেছিলেন সৌদির তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স সৌদ আল ফয়সাল।
সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন সালমান তার সফরের অংশ হিসেবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সুপ্রিম সেক্রেটারি আলী আকবর আহমাদিয়ান, এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরির সঙ্গেও বৈঠক করেন।
বৈঠকে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন,ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে যৌথ সক্ষমতা রয়েছে, যা দিয়ে তারা বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই আঞ্চলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরব পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা দেয়। এর আগে ২০১৬ সালে তেহরানে সৌদি দূতাবাস এবং মাশাদে কনস্যুলেটে হামলার ঘটনার পর কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ।
বর্তমান সফর এবং সৌদি বাদশাহর সরাসরি বার্তা মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি-ইরান সম্পর্ক পুনর্গঠনের পথকে আরও মজবুত করার এক সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।