ইয়েমেনে
হুতি বিদ্রোহীদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ‘অতি গোপনীয়’ তথ্য পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে
ভাগ করে ফের বিতর্কে জড়িয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। সোমবার (২১ এপ্রিল) সিএনএনের
প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই
তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে
বলা হয়, হেগসেথ বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ‘সিগন্যাল’-এ একটি ব্যক্তিগত
গ্রুপ খুলে সেখানে এসব স্পর্শকাতর তথ্য শেয়ার করেন। গ্রুপটির নাম ছিল ‘ডিফেন্স টিম হাডল’। এতে অন্তত
১২ জন সদস্য ছিলেন,
যাদের মধ্যে ছিলেন হেগসেথের স্ত্রী, ভাই, একজন আইনজীবী বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজন।
গত
১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনে হুতিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে যে সামরিক অভিযান
চালায়, তার তথ্য আগেই তিনি ওই গ্রুপে শেয়ার
করেন। এই ঘটনায় হেগসেথের
ওপর আরও একবার সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও একবার
হেগসেথের ভুলে ইয়েমেনে হামলার পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। অভিযোগ, হোয়াইট হাউসের একটি গ্রুপ চ্যাটে তিনি ভুলবশত এক সাংবাদিককে যুক্ত
করেন, ফলে সাংবাদিক আগেভাগেই অভিযান সংক্রান্ত আলোচনার সবকিছু জেনে যান।
প্রথমবারের
ঘটনার সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হেগসেথের পাশে দাঁড়ালেও এবার দ্বিতীয়বার একই অভিযোগ ওঠায় প্রশাসনের গোপনীয়তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে
প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
নিউ
ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা
হয়, যখন হেগসেথ ভুল করে সাংবাদিককে চ্যাট গ্রুপে যুক্ত করেন, তখনই তিনি স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গেও গোপন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। এসব আলোচনায় কীভাবে, কখন এবং কোন বিমান দিয়ে হুতি ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে— এমন বিস্তারিত তথ্যও শেয়ার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে
আরও বলা হয়, হেগসেথ তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এসব তথ্য শেয়ার করেছিলেন, যদিও দফতরের কাজের জন্য হোয়াইট হাউস থেকে তাকে একটি আলাদা সরকারি ফোন দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি
সরকারি গোপন তথ্য ব্যক্তিগত যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে নিরাপত্তা প্রটোকল ভেঙেছেন।
উল্লেখ্য,
হেগসেথের স্ত্রী একজন সাবেক ফক্স নিউজ প্রযোজক এবং অভিযোগ রয়েছে, সামরিক নীতিনির্ধারণী একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকেও তিনি অংশ নিয়েছিলেন।
এই
ঘটনাকে কেন্দ্র করে মার্কিন প্রশাসনের গোপনীয়তা রক্ষায় দায়বদ্ধতা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বশীলতা নিয়ে জোর প্রশ্ন তুলেছে দেশটির রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল।