জর্ডান সরকার দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামপন্থি বিরোধী দল মুসলিম ব্রাদারহুডকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলটি একটি নাশকতার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক ঘোষণায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মুসলিম ব্রাদারহুডের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং দলটির প্রধান কার্যালয়সহ অন্যান্য সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে দলটির দপ্তরগুলো বন্ধ করে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাজেন আল-ফারায়া বলেন, এই সিদ্ধান্ত এক নাশকতামূলক ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে, যাতে দলটির এক নেতার ছেলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, “তথাকথিত মুসলিম ব্রাদারহুডের সমস্ত কার্যকলাপ নিষিদ্ধ এবং তাদের যে কোনো কার্যক্রমকে আইন লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হবে।”
সরকারি বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দলটির সদস্যরা গোপনে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত এবং তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। এদের কার্যক্রম জনশৃঙ্খলা ও জাতীয় ঐক্যের ওপর সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও দাবি করা হয়। এছাড়া, সংগঠনটির যেকোনো প্রচারমূলক উপাদান ও প্রকাশনার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এই ঘোষণার পরপরই রাজধানী আম্মানে দলটির প্রধান কার্যালয় ঘিরে ফেলে পুলিশ এবং সেখানে অভিযান চালানো হয়।
মুসলিম ব্রাদারহুডের পটভূমি
মিশরে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ব্রাদারহুড অনেক আরব দেশেই নিষিদ্ধ হলেও জর্ডানে দলটি দীর্ঘদিন ধরে বৈধভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল। সুন্নি ইসলামপন্থি মতাদর্শে বিশ্বাসী এই সংগঠনটি শরিয়া আইনের অধীনে একটি খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে আসছে এবং তৃণমূল পর্যায়ে এর ব্যাপক সমর্থন ছিল।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলটির রাজনৈতিক শাখা, ইসলামিক অ্যাকশন ফ্রন্ট (আইএএফ), উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে পুঁজি করে আইএএফ ১৩৮টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসন দখল করে নেয়। যদিও এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল মাত্র ৩২ শতাংশ।
ভোটের ফল ঘোষণার পর আইএএফ নেতা ওয়ায়েল আল-সাক্কা বলেন, “জর্ডানের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে।”