ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারত ও
পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা
নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পাল্টাপাল্টি হুমকি ও কড়াকড়ির মধ্যেই
নতুন করে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তানের কাশ্মির অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে।
ভারতের
পক্ষ থেকে হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এই বিপর্যয়ের
সূত্রপাত হয়। এর জেরে পাকিস্তানশাসিত
আজাদ কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে পানিসংক্রান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। আজ (২৭ এপ্রিল) পাকিস্তানের
শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এই
তথ্য জানায়।
প্রতিবেদন
অনুযায়ী, কোনো রকম পূর্বসতর্কতা না দিয়েই ভারতের
পক্ষ থেকে মুজাফফরাবাদের হাত্তিয়ান বালা এলাকায় ঝিলাম নদীতে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে নদীতে
হঠাৎ করেই পানিপ্রবাহ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায় এবং বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই হঠাৎ বন্যায়
নদীতীরবর্তী অঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদ থেকে মাইকিং করে স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিশেষজ্ঞরা
বলছেন, এ ধরনের আচরণ
আন্তর্জাতিক আইন এবং ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন। ওই চুক্তি অনুযায়ী,
কোনো বড় ধরণের পানি
প্রবাহ বা বাঁধ খোলার
বিষয়ে একে অপরকে আগেই অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ভারতের এই অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত
পাকিস্তানের জনগণের জীবন ও সম্পদের ওপর
সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
উল্লেখ্য,
ঝিলাম নদী হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে
বিভাজিত সিন্ধু নদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপনদী। সম্প্রতি কাশ্মির ইস্যুকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লি একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছে— পাকিস্তানকে ‘এক ফোঁটা পানিও’
দেওয়া হবে না।
জবাবে
পাকিস্তানও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সিন্ধুর পানি প্রবাহ আটকে দেওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা ‘যুদ্ধের ঘোষণার’ শামিল হবে, এবং সে অনুযায়ী সামরিকভাবে
জবাব দেওয়া হবে।
এই
উত্তেজনার মধ্যেই সিন্ধু পানি ইস্যুতে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও দেশটির সাবেক
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। তিনি কড়া ভাষায় বলেন, সিন্ধু দিয়ে হয় পানি বইবে,
না হয় ভারতীয়দের রক্ত।
তার
এই মন্তব্যে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।