ছবিঃ সংগৃহীত।
কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। হামলার পরপরই সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে পাঁচবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই উত্তেজনা ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের আশঙ্কায় বিভিন্ন দেশের নেতারা সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এবং অনেকেই মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
তুরস্কের
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এ বিষয়ে মুখ
খুলেছেন। গতকাল (২৮ এপ্রিল) তুরস্কের
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আরও ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে
চলমান উত্তেজনার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় তুরস্ক। তিনি জানান, তার দেশ খুব দ্রুত এই ইস্যুতে দুই
পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়।
এদিকে,
প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ভারত পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি
দেশের নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। পাশাপাশি দিল্লিতে অবস্থিত প্রায় একশ' কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় রয়েছেন।
পেহেলগামে
হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত একের পর এক কড়া
পদক্ষেপ নিচ্ছে। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং পাকিস্তানিদের দেশে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের ভিসা
বাতিল করা হয়েছে। এমনকি দুই দেশের মধ্যে বহু পুরনো সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তিও স্থগিত করেছে ভারত।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও একই কড়াকড়ি আরোপ করেছে। পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে এবং ভারতের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সব ধরনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণাও দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এ পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গম্ভীর হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, ভারত যদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেয়, তবে পাকিস্তানও শক্ত জবাব দেবে। তিনি বলেন, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করাকে আমরা যুদ্ধের ঘোষণা হিসেবে দেখছি। মোদি যদি উত্তেজনা বাড়ান, আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব।
ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর প্রতিটি ভারতীয়
নাগরিকের রক্ত ফুটছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
বিশ্লেষক
ও কূটনীতিকরা বলছেন, ভারত এখনো পেহেলগামের হামলার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। ফলে, ভারতের পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তা আন্তর্জাতিক মহলে
ন্যায্যতা পাবে না। তবে দুই দেশের মধ্যে যদি সংঘর্ষ বেধে যায়, বিশেষ করে উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
এরই মধ্যে ইরান ও সৌদি আরব উভয় পক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছে। ইরান ও বাংলাদেশ প্রকাশ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে। জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিস্থিতি ঠান্ডা রাখার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh