ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার অসহায় মানুষের জন্য খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বহনকারী একটি বেসামরিক জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ১২টার দিকে দক্ষিণ ইউরোপের মাল্টার আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ত্রাণবাহী জাহাজটির তত্ত্বাবধানে ছিল আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা ফাউন্ডেশন (এফএফএফ)। সংস্থাটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, হামলার সময় জাহাজটি গাজার উদ্দেশে আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা অতিক্রম করছিল। এতে ১২ জন ক্রু এবং ৪ জন বেসামরিক যাত্রী ছিলেন।
এফএফএফের-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুটি সশস্ত্র ড্রোন জাহাজটির সামনের অংশে সরাসরি হামলা চালায়, এতে জাহাজে আগুন ধরে যায় এবং কাঠামোয় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের জাহাজ ছিল সম্পূর্ণ নিরস্ত্র এবং গাজার সাধারণ মানুষের জন্য খাবার ও ওষুধসহ জরুরি ত্রাণসামগ্রী বহন করছিল। onboard ছিলেন আমাদের সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরাও। এ হামলায় তাদের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।
সংস্থাটি ইসরায়েলের এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে মাল্টা সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে— ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ হামলার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হোক।
হামলার পর মাল্টা সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, জাহাজটির মূল ইঞ্জিন ও জেনারেটর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং আগুন ধরেছিল। মাল্টার নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড দ্রুত অভিযান চালিয়ে রাত ১টা ২৮ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রাত ২টা ১৩ মিনিটে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপদে মাল্টার বন্দরে নিয়ে আসা হয়।
বর্তমানে জাহাজটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় রয়েছে এবং সেটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হামলার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়ে এএফপি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ও মন্ত্রিসভার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এর আগে ২ মার্চ গাজায় ত্রাণবাহী সব ধরনের ট্রাকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেশটি, যা এখনও বহাল রয়েছে। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে চরম মানবিক সংকটে রয়েছে গাজা উপত্যকার বাসিন্দারা।