গাজা
যুদ্ধবিরতি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী কাতারকে দ্বিমুখী ভূমিকা না নেওয়ার আহ্বান
জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কাতারকে সরাসরি উদ্দেশ করে বলেছে, দ্বিমুখী বক্তব্যের মাধ্যমে উভয় পক্ষে খেলা বন্ধ করুন এবং সিদ্ধান্ত নিন—আপনারা সভ্যতার পক্ষে নাকি হামাসের পক্ষে।
আজ
(৪ মে) এই বক্তব্য দেয়
তেল আবিব, যা কাতার ‘উসকানিমূলক’
বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি রোববার
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন,
ইসরায়েলি
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এই উসকানিমূলক মন্তব্য
রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্ববোধ
থেকে অনেক দূরে এবং এটি আমরা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি
ইসরায়েলের বক্তব্যকে 'সভ্যতা রক্ষার লড়াই' আখ্যায়িত করার সমালোচনা করেন এবং বলেন, এটি ইতিহাসে পরিচিত সেই শাসনব্যবস্থাগুলোর মতো, যারা বেসামরিক মানুষের ওপর চালানো অপরাধকে বৈধতা দিতে মিথ্যার আশ্রয় নিত।
আল-আনসারি প্রশ্ন তোলেন, যে ১৩৮ জন
জিম্মি মুক্তি পেয়েছে, তারা কি ইসরায়েলের সামরিক
অভিযানে নয়, বরং কাতারের মতো মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টায় মুক্ত হয়নি?
তিনি
গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন—যেখানে অবরোধের কারণে খাবার, ওষুধ ও আশ্রয়ের সংকট
দেখা দিয়েছে, এবং ত্রাণকে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
মিশর
ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও এখনো পর্যন্ত ইসরায়েল ও হামাস নিজেদের
অবস্থান থেকে একচুলও সরে আসেনি। বরং দুই পক্ষই ব্যর্থতার দায় একে অপরের ওপর চাপাচ্ছে।
ইসরায়েল
গাজায় এখনও বন্দি থাকা ৫৯ জন জিম্মির
মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজার ভবিষ্যৎ শাসনব্যবস্থায় হামাস থাকবে না—এমন নিশ্চয়তা
দাবি করছে। অন্যদিকে, হামাস দাবি করছে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি ও গাজা থেকে
ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার ছাড়া তারা জিম্মিদের মুক্তি দেবে না।
স্থানীয়
গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় বর্ধিত সামরিক অভিযান অনুমোদন করেছে। এতে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০২৩
সালের ৭ অক্টোবর হামাসের
হামলায় ১,২০০ জনের
বেশি ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জনকে
জিম্মি করা হয় বলে দাবি
করেছে তেল আবিব। এর জবাবে ইসরায়েলি
বাহিনী গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। হামাস-পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত ইসরায়েলি
হামলায় ৫০ হাজারের বেশি
ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।