আফগানিস্তানের
ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার ভারত ও পাকিস্তানের চলমান
সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা
জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে কামানের গোলা বিনিময়ের মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা এই অঞ্চলের স্বার্থের
পরিপন্থী। বুধবার (৭ মে) পাকিস্তানে ভারতের সামরিক হামলার পর কাবুল এই
বিবৃতি দেয়। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে
জানায়, কাবুল দুই পক্ষকে সংলাপ ও কূটনৈতিক পদ্ধতিতে
সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে। একই সঙ্গে দিল্লি ও ইসলামাবাদকে সংঘাত
পরিহার করে সংযম প্রদর্শনের অনুরোধ জানানো হয়।
বুধবার (৭
মে) মধ্যরাতে ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত
কাশ্মিরের অন্তত নয়টি স্থানে হামলা চালায়। ভারত দাবি করেছে, এই অভিযানে মাত্র
২৫ মিনিটে তারা ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে এবং এতে পাকিস্তানে অন্তত ৭০ জন নিহত
হয়। তবে পাকিস্তান বলেছে, হামলায় ২৬ জন বেসামরিক
নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। পাল্টা অভিযানে পাকিস্তানের ছোড়া গোলায় ভারতের অন্তত ১২ জন নিহত
হয় বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি। একইসঙ্গে সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা বা এলওসি বরাবর
উভয় দেশের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যাতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে আরও ১৫ জন নিহত
ও ৩০ জনের বেশি
আহত হয়েছেন।
উভয়
দেশের মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত তিনটি
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। পরিস্থিতির জবাবে বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠক হয় এবং সেখানে
সেনাবাহিনীকে ভারতের হামলার জবাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
এদিকে,
তালেবান সরকারের সঙ্গে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে খারাপের দিকে গেছে। গত এপ্রিলের শুরুর
দিকে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ দেখিয়ে পাকিস্তান হাজার হাজার আফগান নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠায়। অন্যদিকে, ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতায় ফিরলেও ভারত এখনো সরকারটিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। তবুও দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ এবং আফগানিস্তানের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে।
সূত্রঃ রয়টার্স।