বিজেপি মন্ত্রী বিজয় শাহ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি তাদের বোনকেই তাদের বাড়িতে হামলা চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর বিমানে পাঠিয়েছেন।’ পাকিস্তানের সাথে সংঘাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া কর্নেল সোফিয়া কুরেশির ধর্ম পরিচয় নিয়ে কটাক্ষ করে বিপাকে পড়েছেন দেশটির মধ্যপ্রদেশ রাজ্যসভার আদিবাসী কল্যাণমন্ত্রী বিজয় শাহ।
বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি দলের এক জনসভায় ‘অপারেশন সিঁদুরে’র জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা করতে গিয়ে এ বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যারা হিন্দুদের মেরেছে এবং আমাদের মেয়েদের সিঁদুর মুছে দিয়ে বিধবা করেছে তাদের সম্প্রদায়েরই এক বোনকে আমরা প্রতিশোধ নিতে পাঠিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী মোদি তাদের বোনকেই তাদের বাড়িতে হামলা চালানোর জন্য সেনাবাহিনীর বিমানে পাঠিয়েছেন। তারা আমাদের বোনদের বিধবা করেছে, তাই প্রদানমন্ত্রী মোদি তাদের সম্প্রদায়ের বোনকে তাদেরই শিক্ষা দেয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন।’
তার এ মন্তব্যের পরই সমালোচনার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা এসেছে বিজেপিবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে। ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বিজয় শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের একজন মন্ত্রী আমাদের সাহসী কন্যা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি সম্পর্কে অত্যন্ত অবমাননাকর, লজ্জাজনক এবং সস্তা মন্তব্য করেছেন। পেহেলগামের সন্ত্রাসীরা দেশকে বিভক্ত করতে চেয়েছিল, কিন্তু সন্ত্রাসীদের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য পুরো অপারেশন সিঁদুরের সময় দেশ ঐক্যবদ্ধ ছিল।’ মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারী সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয় শাহের বক্তৃতার একটি ভিডিও পোস্ট করেন এবং বিজেপির বিরুদ্ধে ’নীচ চিন্তাভাবনা’ ও ‘ঘৃণাপূর্ণ বক্তব্য’ সমর্থন করার অভিযোগ করেন। কংগ্রেসের রাজ্য শাখাও বিজয় শাহের মন্তব্যকে ’জাতীয় ঐক্য, সামরিক মর্যাদা ও ভারতীয় নারীদের সম্মানের ওপর আক্রমণ’ বলে বর্ণনা করে। এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করতে বারবার ক্ষমা চান বিজেপি মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোন সোফিয়া ধর্ম ও জাতের ঊর্ধ্বে উঠে ভারতের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। তিনি আমাদের নিজের বোনের চেয়েও বেশি সম্মানিত। জাতিকে তিনি যে সেবা দিয়েছেন, সেজন্য আমি তাকে স্যালুট জানাই। তাকে অপমান করার কথা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারি না। তারপরও যদি আমার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন- আমি দশ বার ক্ষমা চাইতেও প্রস্তুত আছি।’