ভারতের
নিয়ন্ত্রণাধীন অরুণাচল প্রদেশের ২৭টি স্থানের নতুন নামকরণ করেছে চীন, যা ঘিরে দুই
প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আবারও চরমে উঠেছে। এ ঘটনায় তীব্র
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। তবে চীন বলছে, এটি তাদের “সার্বভৌম সিদ্ধান্ত” এবং একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়।
চীনের
পক্ষ থেকে গত ১১ মে
নতুন করে এই নামকরণ করা
হয়। দেশটির বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষিত তালিকায় রয়েছে ১৫টি পাহাড়, ৪টি রাস্তা, ২টি নদী, ১টি হ্রদ এবং ৫টি বসতি এলাকা। চীন অরুণাচল প্রদেশকে ‘জাংনান’ নামে অভিহিত করে এবং দাবি করে, এটি দক্ষিণ তিব্বতের অংশ।
বৃহস্পতিবার
(১৫ মে) রেডিও পাকিস্তান এক প্রতিবেদনে এ
তথ্য জানায়।
চীনের
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়,
"ইতিহাস, ভূগোল ও প্রশাসনিক দিক
থেকে জাংনান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই ওই অঞ্চলের জায়গাগুলোর
নামকরণ চীনা ভাষায় করাটা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং এটি আমাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্তের অংশ।”
তবে
ভারতের পক্ষ থেকে এই দাবিকে আগেও
যেমন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, এবারও তীব্র ভাষায় এর প্রতিবাদ জানানো
হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষায়, "অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে। কৃত্রিম নামে কিছু জায়গার নাম পাল্টে বাস্তবতা বদলানো যায় না।”
চীন
২০১৭ সাল থেকেই অরুণাচলের বিভিন্ন স্থানের নামকরণ শুরু করে। ওই বছর তারা
প্রথম ছয়টি স্থানের নতুন নাম দেয়। এরপর ২০২১ ও ২০২৩ সালে
আরও ১৫টি এবং ২০২৪ সালের মার্চে ৩০টি স্থানের নাম বদলায়। এবারের ঘোষণায় সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়াল আরও ২৭টি নতুন নামকরণে।
বিশ্লেষকদের
মতে, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার
সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে চীনের এই পদক্ষেপ ভারতীয়
কূটনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা। প্রতিরক্ষা
ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের বর্তমান সরকার প্রতিবেশী প্রায় প্রতিটি দেশের সঙ্গে কোনো না কোনো বিরোধে
জড়িয়ে পড়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার
আঞ্চলিক শান্তির জন্য উদ্বেগজনক।
চীনের
এই পদক্ষেপ একেবারেই নতুন নয়। অতীতেও বেইজিং একইভাবে অরুণাচলের বেশ কিছু স্থানের নাম নিজেদের ভাষায় বদলে সেখানে নিজের ভূখণ্ড হিসেবে দাবি জানিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিবারই এ ধরনের দাবি
ও পদক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে এবার চীনের সরাসরি ঘোষণা এবং বাণিজ্যিক মানচিত্রে এসব নাম যুক্ত করার চেষ্টা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
সূত্রঃ রেডিও পাকিস্তান।