পাকিস্তানের
বেলুচিস্তানের খুজদারে স্কুলবাসে চালানো প্রাণঘাতী হামলার পেছনে ভারতের সম্পৃক্ততার ‘প্রমাণ’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। এই হামলায় তিনজন
শিক্ষার্থীসহ ছয়জন নিহত হন এবং আহত
হন ৪০ জনেরও বেশি,
যাদের অধিকাংশই শিশু।
বুধবার (২২
মে) রাতে একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তানে সক্রিয় দুটি প্রধান নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন—বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান
(টিটিপি)—ভারতের ‘প্রক্সি’ হিসেবে কাজ করছে। তিনি জানান, ইসলামাবাদ শিগগিরই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে ভারতের সম্পৃক্ততার প্রমাণ তুলে ধরবে।
গত
সোমবার কোয়েটা-করাচি মহাসড়কের জিরো পয়েন্ট এলাকায় সেনানিবাস-সংলগ্ন আর্মি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি বাসে বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় আহত অন্তত ১৫ জন ছাত্রীর
মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
খাজা
আসিফ বলেন, “বিএলএ এবং টিটিপি ধর্ম বা জাতীয়তাবাদের মুখোশে
আসলেও মূলত ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। নয়াদিল্লি এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা
ছড়ানোর জন্য এই গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার
করছে। আমরা এ সংক্রান্ত তথ্য
আন্তর্জাতিক মঞ্চে উপস্থাপন করব।”
তিনি
আরও বলেন, “আমরা কখনোই পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করব না, তবে যদি আমাদের ওপর আক্রমণ হয়, চুপ করে বসে থাকব না।” একইসঙ্গে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করে বলেন, “কাশ্মীর পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে ভারত পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় দেখিয়ে বিশ্বকে
বিপদে ফেলছে।”
এর
আগের দিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণসংযোগ শাখা আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানায়,
ভারতের মদদে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। বিএলএ ও টিটিপির মতো
সংগঠনগুলোর মাধ্যমে নিরীহ বেসামরিক মানুষ ও স্কুলশিক্ষার্থীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো
হচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আইএসপিআর
আরও জানায়, পাকিস্তানি বাহিনী সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী
অভিযানে অন্তত ১২ জন সন্ত্রাসীকে
হত্যা করেছে, যাদের সবাই ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ‘প্রক্সি’ সংগঠনের সদস্য।
এদিকে,
গত মাসে ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে একটি প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত
হয়, যাদের বেশিরভাগই হিন্দু পর্যটক ছিলেন। ভারত সেই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে
এবং যৌথ তদন্তের আহ্বান জানায়। তবে নয়াদিল্লি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
সূত্রঃ ডন।