কানাডার
পার্লামেন্টে আজ মঙ্গলবার (২৭
মে) এক ঐতিহাসিক ভাষণ
দিতে যাচ্ছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। রাজত্ব গ্রহণের পর এটিই তার
প্রথম কানাডা সফর এবং পার্লামেন্টে “সিংহাসন থেকে ভাষণ” হবে প্রায় পাঁচ দশকের মধ্যে কোনো ব্রিটিশ রাজার প্রথম ভাষণ। এই ভাষণে কানাডার
সার্বভৌমত্ব, স্বাধীন অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুমকির প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক বার্তা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজা
চার্লস ও রানি ক্যামিলা
বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন। অটোয়ায় পৌঁছানোর পর রাজদম্পতিকে দেওয়া
হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় উষ্ণ অভ্যর্থনা। সফরের অংশ হিসেবে রাজা কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি ট্রাম্পবিরোধী জনসমর্থনে সম্প্রতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কার্নি বলেন, “সংকট আমাদের আরও শক্তিশালী করে,” এবং রাজাকে “সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের শক্তি” ও কানাডার স্বাধীন
পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন।
রাজা
চার্লসের সফরকালে রিডো হলে (গভর্নর-জেনারেলের বাসভবন) একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যার মধ্যে ছিল ফার্স্ট নেশনস ও আদিবাসী নেতাদের
সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময়। রাজা একটি বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন, ম্যাপেল সিরাপ সংগ্রহ করেন এবং ঐতিহ্যবাহী স্ট্রিট হকি খেলার সূচনাপাকে হাত দেন—কানাডীয় সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের অংশ হিসেবে।
সাধারণ
মানুষের অংশগ্রহণ ছিল প্রাণবন্ত। অনেকেই করমর্দনের জন্য ভিড় করেন। অন্টারিও থেকে আগত এক দর্শক বলেন,
“কানাডা এখন নানা হুমকির মুখে। রাজা চার্লসের এই সফর আমাদের
জন্য সাহসের উৎস।”
আজকের
ভাষণ কেবল সাংবিধানিক নয়, বরং প্রতীকী দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এটি কানাডার ‘যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য’ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বা রাজনৈতিক চাপের
বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে। যদিও ব্রিটিশ সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে রাজা চার্লস অতীতে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার কৌশল অবলম্বন করেছিলেন, এই সফরে তাকে
কানাডার স্বার্থে আরও দৃঢ় অবস্থানে দেখা যেতে পারে।
এই
ঐতিহাসিক ভাষণ কানাডা-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের পাশাপাশি কানাডার সার্বভৌম অবস্থানকে আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।