ছবিঃ সংগৃহীত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের জব্দকৃত অর্থ ছাড় দেয় এবং একটি রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অনুমতি দেয়, তাহলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি নতুন পারমাণবিক সমঝোতা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইরানের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বক্তব্যে তারা এমন সম্ভাবনার কথা জানান।
পারমাণবিক
কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান সমঝোতায় যুক্ত এক সূত্র জানিয়েছে,
যদি ওয়াশিংটন তেহরানের এসব শর্ত মেনে নেয়, তবে খুব দ্রুতই রাজনৈতিক পর্যায়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হতে পারে। যদিও ওই সূত্র জানায়,
এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়নি।
সূত্রমতে,
যদি সমঝোতা হয়, তাহলে তেহরান এক বছরের জন্য
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখবে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে
সংগ্রহ করা ইউরেনিয়ামের একটি অংশ অন্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে অথবা তা পারমাণবিক জ্বালানিতে
রূপান্তর করা হবে।
ইরানের
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পঞ্চম দফা আলোচনার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আব্বাস আরাকচি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইকভের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই অবস্থায় অস্থায়ীভাবে
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত রাখাকে একটি সমঝোতার সম্ভাব্য পথ হিসেবে দেখা
হচ্ছে।
এদিকে,
যুক্তরাষ্ট্র বারবার দাবি করে আসছে, ২০১৫ সালে পারমাণবিক শক্তিধর ছয় দেশের সঙ্গে
করা সমঝোতা অনুসরণ করেই ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পথে এগিয়েছে। ওয়াশিংটনের মতে, এই কর্মসূচি তেহরানকে
পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি নিয়ে গেছে এবং এ থেকে তাকে
সরে আসতেই হবে।
অন্যদিকে,
ইরান বারবার বলছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুধুই শান্তিপূর্ণ, বেসামরিক এবং পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযোগকে তারা
তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
ওয়াশিংটনের
একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ইরান থেকে আসা প্রস্তাবটি এখনো আলোচনার টেবিলে তোলা হয়নি। এ বিষয়ে রয়টার্সের
পক্ষ থেকে মন্তব্য চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে,
ইরানের আধা-সরকারি ফার্সি নিউজ এজেন্সির বরাতে জানা যায়, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাগেই রয়টার্সের প্রতিবেদন অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে ইরান কোনো সমঝোতা করবে না।
ইরানি
সূত্রগুলো আরও জানায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল—যেমন পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করা বা সিল করে
ফেলা—সে ধরনের কোনো
প্রস্তাবে রাজি নয় তেহরান। বরং
ইরান চায়, ট্রাম্প প্রশাসনের সময় আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করে তাদের জব্দ করা তেল বিক্রির অর্থ ফেরত দেওয়া হোক। কাতারে আটকে থাকা ৬ বিলিয়ন ডলারসহ
এসব অর্থের ওপর যেন ইরান পূর্ণ অধিকার পায়।
এই
অর্থের ব্যবহার এখনো ইরান শুরু করতে পারেনি, যদিও ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের
সময়ে একটি বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে তা মুক্ত করা
হয়েছিল এবং বর্তমানে তা কাতারের একটি
ব্যাংকে সংরক্ষিত রয়েছে।
একটি
সূত্র জানায়, তেহরান চায় এই অর্থ যেন
সরাসরি এবং কোনো শর্ত ছাড়াই ইরানে পাঠানো হয়। এর জন্য যদি
কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হয়, তাও তারা চায় যুক্তরাষ্ট্র করুক।
এরই
মধ্যে আবারো হোয়াইট হাউসে ফিরে আসা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর 'সর্বোচ্চ চাপ' নীতির পুনরায় বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং, প্রয়োজন হলে, সামরিক হামলার হুমকিও।
শেষ পর্যন্ত, ইরানের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দেশটি চরম অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। ধর্মীয় নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে তাদের সামনে “নতুন কোনো চুক্তি ছাড়া ভালো কোনো বিকল্প নেই।”
সূত্রঃ রয়টার্স।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh