ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসকারী সাধারণ মানুষদের অস্ত্র ব্যবহারে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো গ্রামবাসীদের আত্মরক্ষায় সক্ষম করে তোলা এবং সীমান্ত নিরাপত্তায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
গেল এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুক হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হওয়ার পর এবং ভারতের অপারেশন সিন্দুরের মাধ্যমে পাকিস্তানে পাল্টা হামলার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা রক্ষী’ (ভিডিজি) কর্মসূচির আওতায় এই প্রশিক্ষণ চালানো হচ্ছে।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী গ্রামবাসীদের মৌলিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের কৌশল শেখানো হচ্ছে, যাতে তারা জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে একে সিরিজ ও ইনসাস অ্যাসল্ট রাইফেলের মতো অস্ত্র কীভাবে কাজ করে, কীভাবে হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যবহৃত হয়—এসব বিষয়ে। প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হচ্ছে বিএসএফ পোস্টেই, যেখানে স্থানীয়রা সরাসরি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে শিখছেন এসব কৌশল।
এছাড়া ড্রোন সনাক্তকরণ, সীমান্তে রাতের টহল, চোরাচালান রোধ এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও তা বিএসএফকে জানানোতেও উৎসাহিত করা হচ্ছে গ্রামবাসীদের। কর্তৃপক্ষ বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ড্রোন চিহ্নিত করার সক্ষমতা বাড়ানো হলে সীমান্তে অস্ত্র ও অন্যান্য অবৈধ জিনিসপত্রের চোরাচালান ঠেকানো আরও সহজ হবে।
বিএসএফ কিছু এলাকায় নারী ও কিশোরীদেরও আলাদাভাবে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কর্মকর্তাদের মতে, প্রশিক্ষণের ফলে স্থানীয়দের আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়ছে, তেমনি তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দেখছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, স্কুল শিক্ষক, এমনকি পঞ্চায়েত প্রধানরাও এতে উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন।
সীমান্ত এলাকার গ্রামবাসীদের এই প্রশিক্ষণ জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নাগরিক সম্পৃক্ততার একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন বিএসএফ কর্মকর্তারা।
সূত্রঃ এনডিটিভি।