গ্রেটার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন গেমস অব থ্রোনস খ্যাত আইরিশ অভিনেতা লিয়াম কানিংহ্যামও। যাত্রা শুরুর আগে কান্নাভেজা কণ্ঠে গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, “আমরা জানি পরিস্থিতি কঠিন, আমরা জানি এটা ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু চেষ্টাই মানবতার একমাত্র ভরসা। চেষ্টা না করলে মানবতা রক্ষা করা সম্ভব নয়।”

তবে তাদের এই প্রতীকী ও মানবিক উদ্যোগকে হালকাভাবে নেয়নি ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ার করে বলেন, তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত এবং প্রয়োজনে অভিযান চালানো হবে। যদিও তিনি সুনির্দিষ্ট করে কোনো পদক্ষেপের কথা বলেননি, তবে তার বক্তব্য অনেকের মনেই ২০১০ সালের ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়—যেখানে তুরস্কের মানবিক সহায়তাবাহী একটি জাহাজে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৯ জন কর্মী নিহত হয়েছিলেন।

বর্তমানে গ্রেটার নৌযানটি গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের পশ্চিমে অবস্থান করছে। যাত্রীদের দাবি, যাত্রা শুরুর পর থেকে একটি ড্রোন তাদের অনুসরণ করছে, যেটি সম্ভবত গ্রিক কোস্ট গার্ডের। নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

এই যাত্রার পেছনে রয়েছে গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে পুরো গাজা উপত্যকা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। মার্চে যুদ্ধবিরতির আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল তিন মাসের কঠোর অবরোধ আরোপ করে, যা খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সরঞ্জামের প্রবেশ একেবারেই বন্ধ করে দেয়।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ব্রিটেন, কানাডা এবং ফ্রান্স একযোগে ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি ব্রিটেন দেশটির সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে।

এদিকে গ্রেটা থুনবার্গ নিয়মিত তার যাত্রার আপডেট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। প্রকাশিত ছবিতে তাকে দেখা যাচ্ছে নৌযানের ডেকে দাঁড়িয়ে, কাঁধে ফিলিস্তিনের কেফিয়েহ ও হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, পাশে বিশাল নীল ভূমধ্যসাগর।