ইসরায়েলের দফায় দফায় হামলা ও খাদ্য সহায়তার প্রবেশ ঠেকিয়ে রাখার ফলে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৫ ফিলিস্তিনির। নিহতদের মধ্যে রয়েছে দুধের অভাবে প্রাণ হারানো মাত্র ৪২ দিন বয়সী এক শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। তারা জানায়, অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া সংকটে এ পর্যন্ত অনাহার ও অপুষ্টির কারণে প্রাণ গেছে অন্তত ১০১ জন ফিলিস্তিনির, যাদের মধ্যে শিশুই ৮০ জনের বেশি। গত কয়েক সপ্তাহে এ মৃত্যুর হার আরও বেড়েছে।
নতুন করে মৃতদের একজন, ছয় সপ্তাহ বয়সী ইউসুফ আবু জাহির মারা গেছে শুধুমাত্র দুধের অভাবে। তার চাচা আদহাম আল-সাফাদি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'বাজারে কোথাও শিশুখাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। আর কোথাও দুধ পাওয়া গেলেও একটা ছোট টিনের দাম ১০০ ডলারের কাছাকাছি।'
এই দুঃসহ চিত্র শুধু ইউসুফের নয়। অনাহারে মারা যাওয়া বাকিদের মধ্যেও রয়েছে আরও তিন শিশু। তাদের একজন, ১৩ বছর বয়সী আব্দুলহামিদ আল-ঘালবান, মারা যায় গাজার খান ইউনিস শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
গাজার খাদ্য মজুত প্রায় পুরোপুরি ফুরিয়ে যায় চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই। মে মাসে আংশিকভাবে অবরোধ শিথিল করে ইসরায়েল। তবে যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, তা ভয়াবহ খাদ্য সংকট সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
বর্তমানে গাজায় ত্রাণ বিতরণ করছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থা, যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত। তবে ত্রাণ নিতে গিয়েই ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন আরও এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, বলছে আল জাজিরার প্রতিবেদন।
মানবিক বিপর্যয়ের এই বাস্তবতা আন্তর্জাতিক মহলকে হতবাক করলেও ইসরায়েলি অবরোধ ও সহায়তা বন্ধে এখনও কার্যকর কোনো আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।