কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) উন্নয়নে সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে বলে শনিবার সবাইকে সতর্ক করেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং। তিনি মনে করেন, এ বিষয়ে বিশ্বকে দ্রুত একমত হতে হবে। যদিও বেইজিং ও ওয়াশিংটনের প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
এ সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতকে এগিয়ে নিতে এবং প্রযুক্তির বিশ্বে মার্কিন আধিপত্যকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক নীতি ঘোষণা করেন।
সেখানে বেসরকারি খাতে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন ‘লাল ফিতা বা দাপ্তরিক জটিলতা ও কাঠোর নিয়ম-কানুন’ বাতিলের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সাংহাইয়ে শনিবার ওয়ার্ল্ড এআই কনফারেন্স (ডব্লিউএআইসি) উদ্বোধনকালে লি কিয়াং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়নে সুশাসন ও ওপেন-সোর্স সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি আন্তর্জাতিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহযোগিতার জন্য চীনের নেতৃত্বে একটি সংস্থা গঠনেরও ঘোষণা দেন। যদিও নতুন ঘোষিত সংস্থা সম্পর্কে আর কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি।
তবে ‘প্রাথমিক বিবেচনায়’ এটির সদর দপ্তর সাংহাইতে হবে বলে পরে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে আসা ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জগুলো ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। উন্নয়ন ও নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য কিভাবে খুঁজে বের করা যায় তার জন্য সমগ্র সমাজের ঐকমত্য জরুরি।’
বর্তমান বিশ্বে প্রায় সব শিল্পক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে এর প্রয়োগ নানা নৈতিক প্রশ্ন তুলছে।
যেমন ভুয়া তথ্যের বিস্তার, কর্মসংস্থানে প্রভাব বা প্রযুক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর সম্ভাবনা।
ডব্লিউএআইসিতে শনিবার এক বক্তৃতায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিদ জিওফ্রে হিনটন, এ পরিস্থিতিকে একটি ‘খুব সুন্দর বাঘের বাচ্চাকে পোষা প্রাণী হিসেবে রাখার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে, এটি বড় হয়ে আপনাকে যেন হত্যা করতে না পারে তেমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
ডব্লিউএআইসির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালনা হবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি বড় পরীক্ষা।’
সূত্র : এএফপি