× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গাজা সম্পূর্ণ দখলের নির্দেশ নিয়ে ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের দ্বিমত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।

০৭ আগস্ট ২০২৫, ১৬:৪০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অতি সম্প্রতি সেনাবাহিনীকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ দখলের যে নির্দেশ দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়েল জামির। প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বৈঠকের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) প্রধানের বৈঠকটি হয়েছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, তেল আবিবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। সেখানে নেতানিয়াহুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এবং মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত উপকমিটির সদস্যরা।

বৈঠকে নেতানিয়াহু সেনাপ্রধানকে কড়া বার্তা দিয়ে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য পুরো গাজা দখলে আনা। এজন্য গাজার সর্বত্র আমাদের অভিযান চালাতে হবে। এমনকি হামাস যেসব অঞ্চলে ইসরায়েলি জিম্মিদের লুকিয়ে রেখেছে বলে আমরা সন্দেহ করছি, সেসব অঞ্চলেও চালাতে হবে অভিযান। আমাদের এই লক্ষ্য যদি আপনার পছন্দ হয় তাহলে দায়িত্ব পালন করুন, নয়তো ইস্তফা দিন।”

জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, “এটা একটা ভুল পদক্ষেপ হবে। পুরো গাজা দখল করলে আমাদের সেনাবাহিনীকে সেখানে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে, যা আসলে হবে একটি ফাঁদের মতো। কারণ হামাস এখনও সম্পূর্ণ দুর্বল হয়নি। তাছাড়া হামাসের কব্জায় এখনও যেসব জিম্মি আছেন, তাদের ঝুঁকিও বেড়ে যাবে।”

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীও বর্তমানে গাজা পুরোপুরি দখলের অভিযানে নামার মতো অবস্থায় নেই উল্লেখ করে বৈঠকে সেনাপ্রধান বলেন, “বর্তমানে গাজার বিশাল এলাকা ইসরায়েলি বাহিনীর দখলে আছে; কিন্তু টানা প্রায় ২ বছর ধরে অভিযানের জেরে আমাদের বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা ও সদস্য ক্লান্ত, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত এবং অনেকে অবসাদগ্রস্তও হয়ে পড়েছে। আমাদের এখন কাজ চালাতে হচ্ছে রিজার্ভ সেনাদের নিয়ে। এই অবস্থায় দখলকৃত এলাকাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে হচ্ছে আমাদের।”

শতকরা হিসেবে গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা বর্তমানে আইডিএফের দখলে আছে বলে জানিয়েচেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়েল জামির।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর হামাসকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

আইডিএফের অভিযান শুরুর পর গত ২২ মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের ৫৬ শতাংশই নারী, শিশু ও বেসাসমরিক; আহত হয়েছেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ এবং পুরো গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।

কিন্তু যে লক্ষ্য নিয়ে গাজায় অভিযান শুরু করেছিল আইডিএফ, তা পূরণ হয়নি। হামাস এখনও নির্মূল হয়নি।

ফলে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে আইডিএফের। বিভিন্ন ইসরায়েলি ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিনের পর দিন ধরে গাজায় অভিযানরত আইডিএফের অনেক কর্মকর্তা এবং সেনা সদস্য মানসিক অবসাদের ভুগছেন। তাদের মধ্যে অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন। গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ জানিয়েছে, গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন ৫৮ হাজার সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য।

আইডিএফের বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ চাইছেন যে কূটনৈতিক পদ্ধতিতে এই সংকটের সমাধান হোক। গাজায় অভিযান বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠিও দিয়েছেন প্রায় ২০০ সাবেক ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য।

গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়ায়েলে জামিরের বৈঠকটি ইসরায়েলের সরকারের সঙ্গে আইডিএফের দূরত্বের সর্বশেষ উদাহারণ।

ইসরায়েলের সরকার অবশ্য ব্যাপারটি স্বীকার করছে না। বৈঠক শেষে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, “সেনাপ্রধানের অধিকার এবং দায়িত্ব হলো যথাযথ ফোরামে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করা; কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করে…বিশেষ করে (গাজায়) যুদ্ধ সম্পর্কে, তাহলে সেই লক্ষ্য দৃঢ়তা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে সেনাবাহিনীকে পূরণ করতে হবে এবং সেনাবাহিনী তা করবে।”

সূত্র : সিএনএন

Sangbad Sarabela

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.