বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংয়ে আজ রোববার (১০ আগস্ট) কথা বলেছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। যুদ্ধপরাধে অভিযুক্ত এ দখলদার বলেছেন, গাজা দখল করা তাদের উদ্দেশ্য নয়।
এছাড়া গাজা যুদ্ধ বন্ধে নতুন করে আবারও পাঁচটি শর্তের কথা সামনে এনেছেন তিনি। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজার ৭৫ শতাংশ অঞ্চল এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। বাকি যে ২৫ শতাংশ রয়েছে সেখানে হামাসের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। হামাসকে সরিয়ে দিতে এখন গাজা সিটি এবং শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে হামলা চালাবেন তারা।
নেতানিয়াহু বলেন, “গাজা দখল করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। সেখানে আমরা একটি বেসামরিক সরকার গঠন করতে চাই। যেটি হামাস ও ফিলিস্তিন অথরিটি সংশ্লিষ্ট নয়।”
গাজার বাকি ২৫ শতাংশ অংশে হামলা চালানোর আগে বেসামরিক মানুষদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য করিডোর ও পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন এ দখলদার।
তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য আমরা নিরাপদ করিডোর এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ঠিক করে দেব।”
গাজা সিটি ও অন্যান্য জায়গায় অভিযানের নামে বর্বরতা শুরুর ব্যাপারে নেতানিয়াহু বলেছেন, “এসব জায়গায় হামলা চালানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এটিই সবচেয়ে ভালো উপায়। গাজার বেসামরিকদের আমরা নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার সুযোগ দেব। যেখানে তারা পর্যাপ্ত খাবার, পানি, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সেবা পাবেন।”
যুদ্ধ বন্ধের পাঁচ শর্তের ব্যাপারে এ দখলদার বলেছেন, “হামাসকে নিরস্ত্রকরণ করতে হবে। সব জিম্মিকে ফেরত দিতে হবে। গাজাকে নিরস্ত্রকরণ করতে হবে। ইসরায়েলকে গাজার সর্বাত্মক নিরাপত্তার দায়িত্ব দিতে হবে এবং গাজায় এমন একটি সরকার গঠন করতে হবে যেটি হামাস বা ফিলিস্তিন অথরিটি সংশ্লিষ্ট নয়।”
নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজাকে তারা দখল করতে চান না। গাজাকে তারা হামাসের কাছ থেকে মুক্ত করতে চান। যদি হামাস অস্ত্র ফেলে দিয়ে জিম্মিদের মুক্তি দেয় তাহলে যুদ্ধ এখনই বন্ধ হয়ে যাবে।
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, গাজার মানুষকে তারা অভুক্ত রাখার নীতি গ্রহণ করেননি। যদি এমন কোনো নীতি থাকত তাহলে দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে সেখানে সব মানুষ মারা যেত। এ দখলদার দাবি করেছেন, হামাস গাজার সাধারণ মানুষের জন্য পাঠানো ত্রাণ চুরি করছে।
তবে হামাস ত্রাণ চুরি করছে এমন কোনো শক্তিশালী প্রমাণ পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের দাতব্য সংস্থা। বরং ইসরায়েলের অবরোধের কারণে অনাহারে গাজায় প্রায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অপুষ্টিতে ভুগছে হাজার হাজার শিশু।
নেতানিয়াহুকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যেসব জিম্মি এখনো জীবিত আছে তাদের তিনি জীবিত উদ্ধার করতে পারবেন কি না। জবাবে এ দখলদার বলেন, বেঁচে থাকা জিম্মিদের জীবিত এবং মৃত জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টাই তারা করছেন।
সূত্র: আলজাজিরা, বিবিসি