ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত রাশিয়ার তেল কিনে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোকে সহায়তা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে হুমকি দিয়ে বলেছে, ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ না করলে শুল্ক আরও বাড়তে পারে। রাশিয়াকে আঘাত করতে গিয়ে ট্রাম্প ভারতকে শাস্তির মধ্যে ফেলেছে। অনেকটা ‘ঝিকে মেরে বউকে শেখানোর’ মতো। সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি মন্তব্য এটা আরও স্পষ্ট করলো।
সোমবার (১১ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা। রাশিয়ার অর্থনীতি ভালো অবস্থানে নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রুশ তেল আমদানির কারণে ভারতের ওপর আরোপিত যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক মস্কোর অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। তার দাবি, চলমান বৈশ্বিক চাপ ও বিভিন্ন দেশের ওপর মার্কিন শুল্ক রাশিয়ার অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত করেছে।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয় রাশিয়াকে তাদের দেশ গঠনে ফিরে যেতে হবে। দেশটি বিশাল... রাশিয়ার ভালো করার বিপুল সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এখন তারা ভালো করছে না। তাদের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় নেই, কারণ এইসব কারণে তা ভীষণভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট তাদের সবচেয়ে বড় বা দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল ক্রেতাকে বলে, ‘তুমি যদি রাশিয়া থেকে তেল কিনো, তবে তোমার ওপর আমরা ৫০ শতাংশ শুল্ক বসাবো’—এটা বড় ধাক্কা।”
মূলত তিনি ভারতের দিকে ইঙ্গিত করেই এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্প দাবি করেন, “আর কেউ এত কঠোর হতো না, আর আমি এখানেই থামিনি”। ট্রাম্প অবশ্য কয়েকদিন আগেই দিল্লি ও মস্কোর অর্থনীতিকে “মৃত” বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এর সঙ্গে রুশ তেল কেনার ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক যোগ করে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, তার আরোপিত শুল্ক শুধু রাজস্ব আনার ক্ষেত্রেই নয়, বরং পাঁচটি যুদ্ধ সমাধান করতেও সহায়তা করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ভারত-পাকিস্তানের সামরিক সংঘাত।
তিনি বলেন, “শুল্ক আমাদের শুধু অর্থই দেয় না, শত্রুদের ওপর বিশাল প্রভাবও সৃষ্টি করে। আমরা পাঁচটি যুদ্ধ থামিয়েছি — পাকিস্তান ও ভারত, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া — যা ৩৭ বছর ধরে চলছিল। দুই দেশের নেতারা উঠে বললেন, আমরা কখনো ভাবিনি এটা সমাধান হবে। রাশিয়া চেষ্টা করেছে, সবাই চেষ্টা করেছে। এটা ছিল খুব কঠিন পরিস্থিতি, কিন্তু আমরা তা সমাধান করেছি।”
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাভাবিক বাণিজ্য সম্পর্কের সম্ভাবনা আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, মস্কো যুদ্ধের পথ ছেড়ে দিলে তা সম্ভব হতে পারে।
তিনি বলেন, “রাশিয়ার অত্যন্ত মূল্যবান ভূখণ্ড আছে। যদি ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের বদলে ব্যবসার পথে হাঁটেন... জানেন তো, তারা যুদ্ধপ্রবণ জাতি। তারা অনেক যুদ্ধ করে। আমার এক বন্ধু বলে, রাশিয়া শক্তিশালী দেশ কারণ তারা শুধু যুদ্ধ চালিয়ে যায়। তারা হিটলারকে হারিয়েছে, আমরাও তা করেছি।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করব। আর সেই বৈঠকের শেষ মুহূর্তে নয়, বরং প্রথম দুই মিনিটেই আমি বুঝে যাব চুক্তি সম্ভব কি না।”
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh