পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বহনকারী একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলটসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর প্রাদেশিক সরকার শনিবার (১৬ আগস্ট) শোক দিবস ঘোষণা করেছে। খবর ডনের
প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গন্ডাপুর জানিয়েছেন, বাজাউর জেলায় ত্রাণ সরবরাহের সময় খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটি মোহমান্দ জেলার পান্ডিয়ালি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটি প্রাদেশিক সরকারের ছিল এবং এতে দুই পাইলট ছাড়াও তিনজন ক্রু সদস্য ছিলেন।
এদিকে, খাইবার পাখতুনখোয়া জুড়ে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৯ জনে। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার (পিডিএমএ) তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ১৬৩ জন পুরুষ, ১৪ জন নারী এবং ১২ জন শিশু। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা বুনার, যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯১ জন।
জুনের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে ঘনবসতিপূর্ণ ও দুর্বল অবকাঠামোর এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি। ধ্বংস হয়েছে বহু ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো। সোয়াত জেলায় ধ্বংস হয়েছে ২৬টি বাড়ি। প্রদেশজুড়ে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে সাতটি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৭টি বাড়ি।
পিডিএমএ জানিয়েছে, আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি আশঙ্কা রয়েছে। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
প্রাদেশিক সরকার ইতোমধ্যে বন্যাকবলিত জেলার জন্য ৫০ কোটি টাকার ত্রাণ তহবিল ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে বুনার জেলার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ কোটি টাকা, বাজাউর, বটগ্রাম ও মানসেহরার জন্য ১০ কোটি টাকা করে এবং সোয়াতের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।
মুখ্যমন্ত্রী গন্ডাপুর জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের ব্যবস্থা করা হবে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল কাজ করছে।