অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৮৫ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে শনিবার (১৬ আগস্ট) এসব তথ্য জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে আটজনের মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮৯৭ জনে। এ সময় আহত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬০ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, অনাহার ও অপুষ্টির কারণে নতুন করে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫১ জনে, যার মধ্যে ১০৮ জনই শিশু।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, চলমান হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন।
এছাড়া, ইসরাইলি বাহিনী মানবিক সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে বলেও অভিযোগ করেছে মন্ত্রণালয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ২৬ জন নিহত এবং ১৭৫ জন আহত হয়েছেন। ২৭ মে থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৯২৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১৪ হাজার ২৮৮ জন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল, যা চলে টানা কয়েক মাস ধরে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে মাত্র দুই মাসের মাথায়, ১৮ মার্চ থেকে আবারও পূর্ণমাত্রায় হামলা শুরু করে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলমান রয়েছে।