উচ্চ তাপমাত্রা, খরা এবং শুষ্ক জ্বালানির কারণে সৃষ্ট দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে বহু দাবানল অন্তত স্পেনে তিনজন এবং পর্তুগালে একজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
এই দাবানলগুলো অঞ্চলের রেকর্ড-ভাঙা তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘটছে, যেখানে শুষ্ক ভূমি ও উপাদানগুলো আগুন আরও ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে—গ্রিস থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত। এটি দক্ষিণ ইউরোপের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ আগুনের মৌসুম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠিয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচটি দেশ সহায়তা চেয়েছে। আঞ্চলিকভাবে হাজার হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে সরিয়ে নিতে হয়েছে, এবং বিভিন্ন দেশে প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছে।
টানা পঞ্চম দিনের মতো আগুনে পুড়ছে গ্রিসের কিয়োস দ্বীপ। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয় হাজার হাজার মানুষকে। রাজধানী এথেন্স ও আশপাশের এলাকায় জারি উচ্চ সতর্কতা।
স্পেন এই দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জরুরি পরিষেবা বিভাগের মহাপরিচালক ভার্জিনিয়া বারকোনেস। তিনি জানান, দেশজুড়ে ১৪টিরও বেশি বড় ধরনের দাবানল চলছে।
দাবানলের কারণে গণপরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে—বিভিন্ন মহাসড়ক বন্ধ করে দিতে হয়েছে এবং উচ্চগতির রেল পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে। ইউরোপীয় বন দাবানল তথ্য ব্যবস্থার মতে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত স্পেনে ৩,৯০,০০০ একরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।
এই সপ্তাহের শুরুতে, দাবানলে স্পেনে তৃতীয় মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে—এক স্বেচ্ছাসেবী দমকলকর্মী মারাত্মক দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। অগ্নিসংযোগের সন্দেহে কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে স্পেনের পুলিশ।
দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলই চরম ঝুঁকিতে; বিশেষভাবে উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে আগুন। আগুনের কারণে বন্ধ বেশ কয়েকটি মহাসড়ক।
অন্যদিকে, স্পেনের প্রতিবেশী দেশ পর্তুগালে অন্তত সাতটি বড় দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে প্রায় ৪ হাজার দমকলকর্মী। দেশটিতে রোববার রাত পর্যন্ত জরুরি সতর্কতা জারি রয়েছে।
সূত্র: নিউজউইক, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।