ভারত আবারও অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে শতদ্রু (সতলজ) নদীতে। ফলে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
মঙ্গলবার পাকিস্তানি গণমাধ্যম এআরওয়াই নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সোমবার রাতে মাধোপুর বাঁধ থেকে হঠাৎ পানি ছাড়ার বিষয়ে ভারত পূর্বাভাস দিলেও বিপুল পরিমাণ পানি ছেড়ে দেওয়ায় ইতোমধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সংস্থার মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে।
ইতোমধ্যেই রাভি নদীতে ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানি পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। জাসসার পয়েন্টে হঠাৎ পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। নরোয়ালে রাভির তীরে মাঠে কাজ করা ৫৬ জনকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকর্মীরা।
শতদ্রু নদীতে গণ্ডা সিং ওয়ালা পয়েন্টে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি প্রবাহ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার কিউসেক, যা বিপজ্জনক মাত্রার অনেক ওপরে। অন্যদিকে রাভি নদীতে জাসসারে প্রবাহ এখন ৮৮ হাজার কিউসেক—মধ্যম মাত্রার বন্যা চলছে সেখানে।
এরইমধ্যে উচ শরীফ, আরিফওয়ালা ও পাকপাট্টান অঞ্চলে শত শত একর কৃষিজমি ডুবে গেছে, ভেসে গেছে অনেক ঘরবাড়িও। শাহদারায়ও বন্যার পানি পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ জানিয়েছে, চেনাব নদীতেও ভারত পানি ছাড়তে পারে বলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ফালিয়া অঞ্চলে রেসকিউ ১১২২-এর টিমগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, তেহসিল ফালিয়ার অন্তত ২২টি গ্রাম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।