সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে পশ্চিমা আধিপত্যবাদ ও শক্তির রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলোকে একটি ন্যায়সংগত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গঠনে অবদান রাখতে হবে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দেশটির তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সদস্য ও অংশীদার দেশগুলোর নেতাদের উদ্দেশে মূল বক্তব্য প্রদানকালে শি “সাংহাই আত্মা”-র কথা স্মরণ করিয়ে দেন, যার মূলনীতি হলো: “পারস্পরিক আস্থা, পারস্পরিক লাভ, সমতা, পরামর্শ, বৈচিত্র্যপূর্ণ সভ্যতার প্রতি সম্মান এবং যৌথ উন্নয়নের সাধনা।”
তিনি ২০০১ সালে এসসিও প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটির অর্জনের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু নতুন অগ্রাধিকার তুলে ধরেন। শি বলেন, সদস্যদের শীতল যুদ্ধের মানসিকতা, গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব এবং দাদাগিরিমূলক আচরণের বিরোধিতা করতে হবে—যেগুলো চীন প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা নীতির সমালোচনায় ব্যবহার করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উচিত একটি সমান ও সুশৃঙ্খল বহু-মেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব এবং একটি সর্বজনীন উপকারী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের পক্ষে অবস্থান নেওয়া, যাতে বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আরও ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক হয়।”
চীনা নেতা সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জাতীয় বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান রেখে পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন। তিনি জনগণের মধ্যে আরও বিনিময়, কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং প্রমাণভিত্তিক নীতিনির্ধারণে জোর দেন।
শি জানান, এসসিওর সম্মিলিত অর্থনৈতিক উৎপাদন ৩০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, এবং এর বৈশ্বিক প্রভাবও ক্রমবর্ধমান। সদস্য দেশগুলো নিরাপত্তা, পরিবেশ ও উদ্ভাবনসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসাথে কাজ করছে।
তিনি বলেন, এসসিও সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে চীনের মোট বাণিজ্য ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে শি ভবিষ্যতে আরও বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেন, যার মধ্যে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল খাতে দক্ষতা উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত।
এ সম্মেলনে এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ২০টিরও বেশি দেশ অংশ নিচ্ছে, পাশাপাশি জাতিসংঘ আসিয়ানসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও উপস্থিত রয়েছেন।
সূত্র: আরটি