পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজাউর, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান এবং লোয়ার দিরে সেনা-পুলিশ অভিযানে প্রায় ৪৫ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অবশ্য ১৯ জন সেনাও প্রাণ হারিয়েছেন। এ তিন জেলায় ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর তিন দিন সেনা-পুলিশ অভিযান হয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃবিভাগ সংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্যনিশ্চিত করেছে । আইএসপিআরের তথ্য অনুসারে, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তিন জেলায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করেছে সেনা-পুলিশ যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে বাজাউরে নিহত হয়েছে ২২ জন, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে ১৩ জন এবং লোয়ার দিরে নিহত হয়েছেন ১০ জন।
নিহত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে। খাইবার পাখতুনখোয়ার সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত আছে। এই প্রদেশটি পাকিস্তানের তালেবানপন্থি রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এর ঘাঁটি অঞ্চল। সেনা-পুলিশ অভিযানে যারা নিহত হয়েছেন, তারাও টিটিপির সদস্য।
২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তান থেকে সরে যাওয়ায় কাবুল দখল করে কট্টর ইসলাপন্থি সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তালেবান। এ গোষ্ঠীটির ক্ষমতা গ্রহণের পর ওই বছর থেকেই আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দুই পাকিস্তানি প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসবাদের উত্থান ঘটে। ২০২৪ সাল ছিল পাাকিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ বছর। এ বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ১৪৪টি ছোট-বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। শতকরা হিসেবে গত এক দশকের মধ্যে ২০২৪ সালে দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলার হার ছিল ৪০ শতাংশ বেশি।
এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন সেনা এবং ৯২৭ জন বেসমরিক মানুষ। বিপরীতে গত বছর সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে নিহত হয়েছে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী।