সেনা আশ্রয় ছেড়ে দিয়েছেন নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ভক্তপুর জেলার গুণ্ডু এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালানো ওলি। সরকারের পতনের ১০ দিন পর সেনা আশ্রয় ছেড়ে প্রকাশ্যে ফিরে এসে চমকে দিয়েছেন তিনি। এক বিস্ফোরক দাবিও করলেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “পুলিশ নয়, বরং আন্দোলনে ‘অনুপ্রবেশকারী’ সশস্ত্র গোষ্ঠী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করেছে।”
চলতি মাসের শুরুতে নেপালে নজিরবিহীন দুর্নীতি, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে জেন-জি তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরু হয়। সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দিলে বিক্ষোভ আরও বেগবান হয় এবং সহিংস রূপ নেয়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা রাজপথে নামলে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হন এবং কয়েক শতাধিক আহত হন। ঘটনার পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। এরপর নিরাপত্তার কারণে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তিনি ও অন্যান্য মন্ত্রী গোপন আশ্রয়ে চলে যান।
নেপালের সেনাবাহিনী ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, ওলি সেনা নিরাপত্তায় ৯ দিন কাটানোর পর একটি ব্যক্তিগত স্থানে চলে যান। তবে সেই স্থান প্রকাশ করা হয়নি।
১০ দিন আত্মগোপনে থাকার পর শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নেপালের সংবিধান দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় তিনি ফের জনসম্মুখে আসেন এবং বলেন, “সরকার কখনোই পুলিশ বা সশস্ত্র বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়নি। যে ধরনের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে, তা নেপালি পুলিশের কাছে নেই। এটি তদন্তের দাবি রাখে।”
তিনি আরও বলেন, “বিক্ষোভে ষড়যন্ত্রমূলক অনুপ্রবেশ হয়েছিল। সেই অনুপ্রবেশকারীরাই আন্দোলনকে সহিংস করে তুলেছে এবং আমাদের তরুণদের হত্যা করেছে। আমার পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়, যা স্পষ্ট করে যে বাইরের কোনো শক্তি আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছে।”
কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউনিফাইড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) চেয়ারম্যান হিসেবে ওলি এই অভিযোগও তোলেন যে, বর্তমান সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন দেশটির সাবেক বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
সূত্র: কাঠমান্ডু পোস্ট