ফিনল্যান্ড উপসাগরের উপর দিয়ে ‘তিনটি রাশিয়ান মিগ-৩১’ যুদ্ধবিমান অনুমতি ছাড়াই এস্তোনিয়ার আকাশে প্রবেশ করেছে। রুশ যুদ্ধবিমানটি মোট ১২ মিনিট ধরে সেখানে অবস্থান করেছে। সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশ এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অভিযোগ এনে এটিকে ‘নির্লজ্জ অনুপ্রবেশ’ বলে মন্তব্য করেছে। একই সঙ্গে ন্যাটোর পরামর্শ চেয়েছে দেশটি। রাশিয়ান যুদ্ধবিমান গত শুক্রবার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর এস্তোনিয়া ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য সদস্য দেশের পরামর্শ চেয়েছে। 

ন্যাটোর একজন মুখপাত্র বলেছে, তাদের সামরিক জোট তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এটিকে রাশিয়ার ‘বেপরোয়া’ আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছে। ঘটনাটিকে ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া জানানোর ক্ষমতার আরেকটি উদাহরণ বলেও মন্তব্য করেছে ন্যাটোর এই মুখপাত্র। এদিকে ইতালি, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিমান মোতায়েন করেছে। যদিও পরে রাশিয়া এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ড ও রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে রাশিয়ান ড্রোন- গত সপ্তাহে দেশ দুটির এ অভিযোগের পর ন্যাটো সামরিক জোট ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ন্যাটো তার প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য যুদ্ধবিমানসহ সামরিক উপকরণ পূর্ব দিকে সরানোর কথা জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টজান প্রিক বলেছেন, এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ ‘গুরুতর’। ‘বেশ কিছুদিন ধরে ন্যাটোকে পরীক্ষা করার চেষ্টা করছে রাশিয়া’। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, রাশিয়া ন্যাটো দেশগুলোকে তাদের যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন করার পরিবর্তে সম্মিলিত প্রতিরক্ষার ওপর মনোনিবেশ করার জন্য একটি সংকেত পাঠাতে চায়।’

পোলান্ডের আকাশসীমা রক্ষার জন্য আজ শনিবার ভোরে মিত্রবাহিনীর বিমান মোতায়েন করা হয়েছিল। কারণ রাশিয়া পশ্চিম ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করেছিল।

এদিকে রাশিয়ান মিগ-৩১ নামে একটি যুদ্ধবিমানের এস্তোনিয়ান আকাশসীমা ছেড়ে যাওয়ার পর বাল্টিক সাগরের ওপর বিমানটির একটি ছবি দেখা গেছে যা গতকাল শুক্রবার প্রকাশ করে সুইডেনের সশস্ত্র বাহিনী। ছবিটি প্রকাশ করেছে রয়টার্স। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, তারা ছবিটির অবস্থান বা সেটি তোলার তারিখ স্বাধীনভাবে যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। 

এস্তোনিয়ার অভিযোগের জবাবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার ভোরে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে দাবি করা হয়, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। সেগুলো বাল্টিক সাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপর দিয়ে রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে কালিনিনগ্রাদে গেছে। বাল্টিক সাগর উপকূলবর্তী কালিনিনগ্রাদ রুশ ভূখণ্ড। 

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে এক পোস্টে বলেছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো আন্তর্জাতিক আকাশসীমার নিয়ম মেনে চলেছে। স্বাধীন তদন্তের মধ্যমে তারা নিশ্চিত হয়েছে, তাদের বিমান অন্য কোনো রাষ্ট্রের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। রুশ যুদ্ধবিমানগুলো উড়ে যাওয়ার সময় নির্ধারিত আকাশপথে ছিল। এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি।