ছবি: সংগৃহীত।
রাজনীতিতে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এখন জাপান। দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে এগিয়ে এসেছেন সানায়ে তাকাইচি। তিনি বর্তমানে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর নেতৃত্ব নির্বাচনের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। জাপানে নারী নেতৃত্ব এখনও বিরল হলেও এই নির্বাচন দেশটির রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আগামী ৪ অক্টোবর এলডিপির নেতৃত্ব নির্বাচনী ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন রক্ষণশীল ইমেজের জন্য পরিচিত তাকাইচি এবং কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি। গত বছর বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার কাছে রানঅফ রাউন্ডে অল্পের জন্য হেরে যান তিনি।
যদি তাকাইচি দল এবং সংসদীয় ভোটে জয় পান, তবে তিনিই হবেন জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতিতে লিঙ্গ সমতার সীমিত অগ্রগতির দেশটিতে এটি হবে এক যুগান্তকারী অর্জন।
নাগোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ল-এর অধ্যাপক হিরোকো তাকেদা বলেন, ‘‘একজন নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়া বিশ্বে জাপানকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে।’’
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে ১৪৮টি দেশের মধ্যে জাপানের অবস্থান ১১৮তম। অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত। দেশটিতে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হয়নি। সংসদেও নারী সদস্যের সংখ্যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক কম।
নারা প্রিফেকচারের বাসিন্দা তাকাইচি সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে অনুপ্রেরণা হিসেবে মানেন। যদিও নারী অধিকারের সমর্থক হিসেবে তিনি আগে পরিচিত ছিলেন না, সাম্প্রতিক সময়ে অবস্থান কিছুটা বদলেছেন। সম্প্রতি তিনি বেবিসিটার ফি আংশিক কর-ছাড়যোগ্য করা এবং শিশু পরিচর্যা পরিষেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনবার নার্সিং ও কেয়ারগিভিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তাকাইচি বলেন, ‘‘আমি চাই এমন একটি সমাজ গড়ে উঠুক, যেখানে সন্তান লালন-পালন বা যত্নের কারণে নারীদের চাকরি ছাড়তে হবে না।’’
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, তাকাইচির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় ‘গ্লাস ক্লিফ’ ঘটনারই প্রতিফলন-যেখানে সংকটের সময়ে নারীদের নেতৃত্বে ঠেলে দেওয়া হয়, ব্যর্থতার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও।
দুটি নির্বাচনী ব্যর্থতার পর এলডিপি বর্তমানে সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াই ক্ষমতায় আছে। ফলে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে আইন, বাজেট ও অর্থনৈতিক প্যাকেজ পাসে বিরোধী দলের সঙ্গে কঠিন সমঝোতায় যেতে হবে।
অধ্যাপক তাকেদা সতর্ক করে বলেন, ‘‘যদি তাকাইচি ব্যর্থ হন, মানুষ বলবে—আমরা চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু হয়নি। তখন তাকাইচিকে গ্লাস ক্লিফ থেকে ফেলে দেওয়া হবে এবং তিনি আর উপরে উঠতে পারবেন না।’’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিনজিরো কোইজুমির পেছনে তাঁর বাবা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কোইজুমির সমর্থন থাকলেও তাকাইচির এমন পারিবারিক রাজনৈতিক প্রভাব নেই। এটিও তাঁর জন্য বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh