বাগরাম বিমানঘাঁটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হুমকিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে আফগানিস্তান। তালেবান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষাই তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার—কোনো বিদেশি শক্তিকে আফগান মাটিতে সেনা মোতায়েন করতে দেওয়া হবে না।
আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জারি করা এক বিবৃতিতে আফগানিস্তান জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অতীতের সব আলোচনায়ই সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা ছিল তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। দেশটি শরীয়াভিত্তিক নীতি ও অর্থনীতি-নির্ভর পররাষ্ট্রনীতির কাঠামোর মধ্যে থেকে সব দেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক চায়।
বিবৃতিতে দোহা চুক্তির কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং সার্বভৌমত্বকে সম্মান জানাবে। আফগানিস্তান বলেছে, ওয়াশিংটনের উচিত সেই প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে চলা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিত্রাত সামাজিক মাধ্যমে বলেন, ‘পূর্বের ব্যর্থ অভিজ্ঞতা পুনরাবৃত্তি না করে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত জ্ঞান ও বাস্তবতানির্ভর নীতি গ্রহণ করা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, আফগানিস্তান গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক স্বার্থের ভিত্তিতে।
এরই মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি আরও দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘শুধু বাগরাম বিমানঘাঁটি নয়, আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি জমিও আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে দেব না। কোনো বিদেশি সেনাবাহিনীকে আমাদের ভূখণ্ডে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়, তবুও জমি হস্তান্তরের প্রশ্নই আসে না।’
উল্লেখ্য, শনিবার ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ লিখেছিলেন, ‘যদি আফগানিস্তান বাগরাম বিমানঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে ভয়াবহ কিছু ঘটতে চলেছে।’ যদিও তিনি কী ধরনের পরিণতির হুমকি দিয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি।
এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, প্রশাসন আফগানিস্তান থেকে বাগরাম ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এ সময় তিনি বাইডেন প্রশাসনের আফগানিস্তান থেকে বিশৃঙ্খল প্রত্যাহারকে তীব্র সমালোচনা করেন।