মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসছেন। রয়টার্স এবং জিও নিউজ সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন দুই দেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেছে।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন। দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি প্রথম পাকিস্তানি সেনাপ্রধান হিসেবে হোয়াইট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্পের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে। এর আগে ওয়াশিংটন দীর্ঘকাল ধরে এশিয়ায় চীনের প্রভাব ঠেকানোর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। তবে ট্রাম্পের আমলে ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা জটিলতা, ভারতীয় পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ এবং ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের পর ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দাবির মতো বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ভারত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নতুনভাবে তৈরি করতে আগ্রহী হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
জিও নিউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প ও শেহবাজের এই বৈঠকে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনা হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই, অর্থনীতি এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এগিয়ে নিতে মনোযোগী এবং এর অংশ হিসেবেই তিনি পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প হতাশা প্রকাশ করলেও দুই দেশের সম্পর্ক এখনো মজবুত। তিনি জানান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোয়াড সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে।
এদিকে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকার জন্য ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। তবে ইসলামাবাদ ইসরায়েলের গাজা, কাতার এবং ইরান আক্রমণেরও নিন্দা জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্প মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন, যেখানে শেহবাজ শরীফও উপস্থিত ছিলেন এবং সেখানে গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।