চীন থেকে ইরান হয়ে ইরাক পর্যন্ত রেল যোগাযোগ বিস্তৃত হচ্ছে। এটার মধ্য দিয়ে এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের নতুন সুযোগ তৈরি হবে, যা পশ্চিম এশিয়ার বাণিজ্যে প্রজন্মগত প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
ইরানের রেল পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ জাভাদ শাহজুয়ি মেহর নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শালামচে–বাসরা রেলপথের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি ইরান ও ইরাকের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা গভীর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
শাহজুয়ি বলেন, “এটি কেবল দুই দেশকে যুক্ত করার বিষয় নয়, বরং এই রুট আঞ্চলিক বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের বিকাশে উভয় দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, ইরানের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকল্পটির মূল অগ্রাধিকার যাত্রী পরিবহন, যা দুই দেশের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে প্রতিফলিত হয়েছে। তবে এর প্রভাব কেবল দ্বিপাক্ষিক ভ্রমণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই পথটি একাধিক দেশকে যুক্ত করার নতুন চ্যানেল খুলে দেবে এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যের ধারা নতুনভাবে রূপ দেবে।
বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, ইরান ও ইরাকের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্য শিগগিরই ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে। বিদ্যমান সড়ক ও রেল নেটওয়ার্ক এত বড় বাণিজ্যিক প্রবাহ সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেন শাহজুয়ি। তাই নতুন অবকাঠামোয় বিনিয়োগ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।
ইরানের নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বিস্তৃত যোগাযোগ বাড়াতে ইরান বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইরান বর্তমানে পূর্ব, পশ্চিম ও কাস্পিয়ান সাগর রুট ব্যবহার করে রাশিয়ার দিকে নর্থ-সাউথ করিডোর উন্নয়নের চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, চীন ইউরোপ ও আফ্রিকায় পণ্য রপ্তানির জন্য ইরান–ইরাক রুট ব্যবহার করতে চায়। সে অনুযায়ী, চীন–ইরান রেল সংযোগের উন্নয়ন ইরাকের সঙ্গে চীন ও মধ্য এশিয়ার সম্পর্ক জোরদারের ভিত্তি হতে পারে। শালামচে–বাসরা, হেরাত–মাজার-ই-শরিফ রেলপথ এবং চীন থেকে ইরাক পর্যন্ত ইরান হয়ে একটি সমন্বিত রেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রকল্প আঞ্চলিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সূত্র: মেহের নিউজ