মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার কারণ হিসেবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, ট্রাম্প পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার সময় এই অঞ্চলকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।
আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুনে পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়, ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে সুপারিশ করবে। ইসলামাবাদের ভাষ্য, মে মাসে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে তার ‘সিদ্ধান্তমূলক কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ও নেতৃত্ব’ ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পাহেলগামে হামলার দায় বিনা প্রমাণে পাকিস্তানের ওপর চাপায় নয়াদিল্লি। এরপর ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় এবং পাকিস্তান পাল্টা আঘাত হানে। পরে যুদ্ধবিরতি হলে উত্তেজনা কমে আসে। সে সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তার মধ্যস্থতা ‘একটি ভয়াবহ পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকিয়েছে’।
লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ‘মি. ট্রাম্প পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করেছেন এবং অঞ্চলকে বড় ধরনের ধ্বংস থেকে রক্ষা করেছেন। যদি তিনি হস্তক্ষেপ না করতেন, আরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো।’
তিনি আরও জানান, ট্রাম্প ইথিওপিয়া-মিসর এবং ইউক্রেন ইস্যুতেও উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রেখেছেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাকে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠককে ‘খুব ফলপ্রসূ ও সফল’ আখ্যা দেন শেহবাজ শরিফ। তিনি বলেন, ‘সর্বোত্তম বিষয় ছিল যে জাতিসংঘ ভবনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা ইস্যুতে এক বৈঠক সহ-সভাপতিত্ব করেন এবং পাকিস্তান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, জর্ডান, মিশর ও ইন্দোনেশিয়াকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে গঠনমূলক আলোচনা হয়। আশা করছি খুব শিগগিরই ইতিবাচক ফল মিলবে এবং গাজা যুদ্ধে যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে গাজায় যে দমন-পীড়ন চলছে, তা আধুনিক যুগে খুব কম দেখা গেছে। শিশু, নারী ও তরুণদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা জাতিসংঘে শক্ত কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেছি।’
শেহবাজ জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে তিনি ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কথাও তুলেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, নয়াদিল্লি সিন্ধু পানিচুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনী ভারতের আগ্রাসন প্রতিহত করেছে। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সাঈদ আসিম মুনিরের নেতৃত্বে আমাদের বাহিনী দেশকে রক্ষা করেছে। বিমানবাহিনীও শক্ত প্রতিরক্ষা গড়ে তুলেছে। এতে বিশ্ব বুঝেছে, পাকিস্তান শুধু পারমাণবিক শক্তিই নয়, প্রথাগত যুদ্ধেও অত্যন্ত সক্ষম।’