দীর্ঘদিন ধরে চলা বিদ্যুৎ ও পানি সংকটের বিরুদ্ধে জেন জি বা তরুণ প্রজন্ম-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের চাপের মুখে মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনা অবশেষে সরকার ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার টেলিভিশনে দেওয়া এক জাতীয় ভাষণে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা বলেন, “সরকারের সদস্যরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেননি। আমরা তা স্বীকার করি এবং ক্ষমা চাইছি।” তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিসভার কার্যভার বাতিল করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানী আন্টানানারিবো থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দ্রুত দেশের আটটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার তরুণ ‘আমরা বাঁচতে চাই, কেবল টেনে টেনে টিকে থাকতে চাই না’ শ্লোগান নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগের নিন্দা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী ও পথচারী উভয়ই রয়েছেন। তবে মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিসংখ্যানকে ‘ভুল তথ্য’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সহিংসতার খবর আসার পর আন্টানানারিবোতে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর এই দমন-পীড়নে গ্রেপ্তার, মারধর ও সরাসরি গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটেছে।
প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা প্রথমে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় শুধু জ্বালানি মন্ত্রীর বরখাস্ত করেছিলেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা পুরো সরকারের পদত্যাগের দাবি জানালে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। সোমবার তিনি ভাষণে বলেন, জনগণের রাগ ও দুঃখ বোঝেন এবং তরুণদের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত রয়েছেন। তবে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য ভাড়া করা গুন্ডারা বিভিন্ন ভবনে লুটপাট চালিয়েছে।