মধ্য এশিয়ায় ভারতের একমাত্র বিদেশি পূর্ণাঙ্গ সামরিক স্থাপনা তাজিকিস্তানের আয়নি বিমানঘাঁটি থেকে নয়াদিল্লি তাদের সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পুরোপুরি সরিয়ে নিয়েছে। এই সেনা প্রত্যাহারের পর অঞ্চলটিতে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' জানিয়েছে, ২০২২ সালেই সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হলেও, গত মাসেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
সোভিয়েত আমলে নির্মিত এবং পরে অচল হয়ে পড়া এই ঘাঁটিটি ২০০২ সালে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ভারত সংস্কারের দায়িত্ব নেয়। ভারতের বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও) প্রায় ৮ কোটি ডলার ব্যয়ে এর আধুনিকায়ন করে, যেখানে ৩২০০ মিটার দীর্ঘ রানওয়ে ও যুদ্ধবিমান মোতায়েনের সব সুবিধা তৈরি করা হয়েছিল।
আয়নি বিমানঘাঁটিটি পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাছাকাছি হওয়ায় এটি ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সুবিধা এনে দিয়েছিল। সর্বোচ্চ কার্যক্রমের সময় সেখানে প্রায় ২০০ ভারতীয় সেনা সদস্য এবং সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানও মোতায়েন ছিল।
সরকারি ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সংস্কার ও অবকাঠামো উন্নয়নের চুক্তি ২০২২ সালে শেষ হওয়ার পর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাঁটিটি তাজিক সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, তাজিকিস্তান রাশিয়া ও চীনের চাপের মুখে ছিল, যারা চুক্তি নবায়নে অনীহা দেখিয়েছে। ফলে ভারত অত্যন্ত নীরবে কর্মী ও সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঘাঁটিটি হারানো মানে ওই অঞ্চলে চীন ও রাশিয়ার বাড়তি প্রভাবের মুখে ভারতের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়া। তাদের মতে, এটি প্রমাণ করে যে ভারত এখনো প্রতিবেশী অঞ্চল ছাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক উপস্থিতি ধরে রাখতে পারেনি।
বর্তমানে ভারতের কোনো পূর্ণাঙ্গ বিদেশি সামরিক ঘাঁটি নেই। তবে ২০২৪ সালে মরিশাসের আগলেগা দ্বীপে একটি যৌথ বিমানবন্দর ও নৌ জেটি স্থাপন করেছে, যা ভারত মহাসাগরে নজরদারির সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।