ডায়াবেটিস একটি গুরুতর অসুখ। এই অসুখে আক্রান্ত রোগীকে প্রতিনিয়ত সচেতন থাকতে হয়। নইলে জাপটে ধরে ভয়াবহ কিছু শারীরিক সমস্যা। তালিকায় আছে কিডনি ডিজিজ, ডায়াবেটিস নেফ্রোপ্যাথি, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও গ্লকোমার মতো কিছু গুরুতর রোগ। তাই ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে রাখা চাইই চাই। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে হাতের কাছে থাকা নিমপাতা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে ইনসুলিন হরমোন কম বের হয় বা বের হলেও তা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এই কারণেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকে। আর দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকলে সমস্যার শেষ থাকে না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তবে মনে রাখবেন, আমাদের হাতের কাছে থাকা নিমপাতার গুণেই কিন্তু এই সমস্যার সহজ সমাধান করা সম্ভব। তাই যুগ যুগ ধরে মধুমেহ রোগের প্রকোপ কমাতে নিমপাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকি প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এই নিয়ে বিশদে বর্ণনা রয়েছে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা সুস্থ থাকতে নিমপাতার দ্বারস্থ হতেই পারেন।
নিমের গুণেই সুগার কমবে
নিমপাতার মতো অত্যন্ত উপকারী ভেষজ আপনি অন্য একটি খুঁজে পাবেন না। এতে রয়েছে গ্লাইকোসাইডস এবং ট্রিপটোপেনয়েডসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভানয়েডস। আর এসব উপাদান একসঙ্গে মিলেই রক্তে শর্করার লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই প্রসঙ্গে এনসিবিআইতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানানো হয়েছে, নিমপাতায় রয়েছে অ্যান্টিডায়াবেটিক প্রপার্টিজ। আর এসব উপাদান ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত নিমপাতা খেলে উপকার পাবেন।
রোজ সকালে চিবিয়ে খান
নিমপাতা চিবিয়ে খাওয়ার প্রথা যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত নিমপাতা চিবিয়ে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আসে। তাই আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা প্রতিটি সুগার রোগীকে রোজ সকালে উঠে খালিপেটে কয়েকটি নিমপাতা চিবিয়ে খেয়ে নিতে বলেন। নিমপাতা চিবিয়ে খেলে এর থেকে সর্বাধিক উপকার পাওয়া যায়। এমনকি খুব দ্রুত সুগারের মাত্রাও কমে।
নিমপাতার পানীয় অত্যন্ত উপকারী
ডায়াবেটিসের মতো জটিল সমস্যাকে বাগে আনতে চাইলে নিমপাতার পানীয় তৈরি করে পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটি পাত্রে পানি নিন। সেই জলে কয়েকটি নিমপাতা ফেলে দিন। এরপর জল টগবগ করে ফোটা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জল ফুটতে শুরু করলে দেখবেন জলের রং হালকা সবুজ হয়ে গেছে। এর অর্থ হলো আপনার নিমপাতার পানীয় তৈরি। এরপর এই পানীয় ছেঁকে নিয়ে দিনে অন্তত দু’বার পান করুন। এতেই দেখবেন সুগার লেভেল কমেছে। আপনি অনায়াসে সুস্থ থাকতে পারবেন।
ওষুধ খাওয়া ছাড়লে চলবে না
মুশকিল হলো, এই প্রতিবেদনটি পড়ার পর অনেকেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে নিমপাতা খাওয়া শুরু করতে পারেন। এই ভুল একদম করবেন না। মনে রাখবেন, নিমপাতা সুগার কমাতে পারে মাত্র। কিন্তু এই পাতা ডায়াবিটিসের ওষুধের বিকল্প নয়। তাই নিমপাতা খাচ্ছেন বলে ওষুধ খাওয়া ছাড়লে বিরাট বিপদ হতে পারে। তাই কোনোভাবেই সুগারের ওষুধ বা ইনসুলিন বন্ধ করবেন না।
ডায়াবেটিসের মতো ঘাতক অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম হলো মাস্ট। এক্ষেত্রে জিমে সময় কাটাতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। জিম করা সম্ভব না হলে সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, জগিং বা হাঁটার মতো এরোবিক এক্সারসাইজ করতে পারেন। এর মাধ্যমেই ব্লাড সুগারের ফাঁদ থেকে বাঁচতে পারবেন। এমনকি দেহের অন্যান্য অঙ্গও থাকবে সুস্থ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । [email protected] । বিজ্ঞাপন ও বার্তা সম্পাদক: 01894944220
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2025 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh