কিডনি শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল অঙ্গ। শরীরের রেচন ক্রিয়া সম্পাদন হয় কিডনির মাধ্যমে। তবে অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস কিডনিতে পাথর তৈরির ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিডনিতে লবণ এবং খনিজ পদার্থ জমা হওয়ার ফলে তৈরি এই পাথরগুলোর চিকিৎসা না করা হলে তীব্র ব্যথা, অস্বস্তি এবং জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
ভারতীয় চিকিৎসক মোহিত খিরবাত বলেন, জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা কিডনির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে পারে। কিডনিতে পাথর হওয়া রোধ করতে আরও কিছু টিপস দিয়েছেন-
১. প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন
কিডনিতে পাথর হওয়া এড়াতে সবচেয়ে ভালো এবং সহজ উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। এতে প্রস্রাবের খনিজ এবং লবণ মিশ্রিত দ্রবণ পাতলা করা সহজ হয়। ফলে পাথর তৈরির সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পান করুন। ওজন বেশি হলে আরও বেশি পানি পান করুন।
২. অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলুন
সোডিয়াম অর্থাৎ লবণ সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি হ্রাস পায়। এরফলে পাথর গঠনের সম্ভাবনা বাড়ায়। কিডনিকে সুরক্ষিত রাখতে প্রক্রিয়াজাত খাবার, লবণাক্ত খাবার এবং খাবারে বাড়তি লবণ খাওয়া কমিয়ে দিন।
৩. বাড়তি অক্সালেটসমৃদ্ধ খাবার বাদ দিন
পালং শাক, বিটরুট, বাদাম এবং চকোলেটের মতো খাবারে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট থাকে, যা ক্যালসিয়ামের সাথে মিশে পাথর তৈরি করতে পারে। কিডনিতে আগে পাথর হয়ে থাকলে এসব খাবার একেবারে বাদ দিতে হবে।
৪. উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন বৃদ্ধি করুন
প্রাণীজ প্রোটিন খবারে শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। ইউরিক অ্যাসিড পাথরে পরিণত হয়। তাই খাদ্যতালিকায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেমন মসুর ডাল, বিন এবং টোফু ইত্যাদি রাখার চেষ্টা করুন।
৫. কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন
কোলা, সোডা এবং বাজারজাত করা মিষ্টিযুক্ত পানীয়তে চিনি এবং ফসফরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এসব অধিক পান করার ফলে পাথরের ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই বেশি করে পানি এবং তাজা ফলের রস পান করুন।
৬. নিয়ন্ত্রিত ওজন
স্থূলতা প্রস্রাবের অ্যাসিড-বেস ভারসাম্যকে পরিবর্তন করতে পারে, যার ফলে পাথর তৈরির সম্ভাবনা বেশি থাকে। নিয়মিত ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে এবং কিডনির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস